দেশজুড়ে

ভারতের স্থলবন্দরে হেনস্তার শিকার বাংলাদেশি

ভারতের স্থলবন্দরে হেনস্তার শিকার বাংলাদেশি

ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরে আজাদুর রহমান আজাদ নামে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এক যাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে চ্যাংড়াবান্ধায় জনৈক কাস্টম কর্মকর্তার ইন্ধনে কয়েকজন চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ (মুদ্রা বিনিময়) কর্মচারীর যোগসাজশে হেনস্তার ঘটনা ঘটে। হেনস্তার শিকার আজাদুর রহমান এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

আজাদুর রহমানের ভাষ্যমতে, তিনি ঢাকার পল্লবী এলাকার বাসিন্দা। ভারতের দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং এলাকার একটি বিদ্যালয়ে তার ছেলে পড়াশোনা করছে। ছেলেকে আনতে সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি। এসময় কোনো দালাল না ধরে সরাসরি ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে জনৈক কাস্টম কর্মকর্তার কাছে যান আজাদুর রহমান। তখন কাস্টম কর্মকর্তা মানি এক্সচেঞ্জের একটি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে টাকা বিনিময়ের কথা বলেন।

এসময় আজাদ নিজের ইচ্ছেমতো প্রতিষ্ঠানে মুদ্রা বিনিময় করবেন বলে জানান কাস্টম কর্মকর্তাকে। এ কথা বলায় ওই কর্মকর্তা কয়েকজন চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ কর্মচারীকে আজাদের পেছনে লেলিয়ে দেন। আজাদ অন্য প্রতিষ্ঠানে মুদ্রা বিনিময় করে গাড়িতে উঠতে গেলে কতিপয় চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ কর্মচারী বাধা দেন। এসময় আজাদের সঙ্গে থাকা ট্রাভেল ব্যাগ ছুড়ে ফেলে দেন ও তাকে (আজাদ) হেঁটে যেতে বলেন। তিনি সড়কে চলাচলরত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় মাথাভাঙ্গা যাওয়ার বাসে উঠতে চাইলে উঠতে বাধা দেন কর্মচারীরা।

Advertisement

একপর্যায়ে আজাদ প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক হেঁটে চ্যাংড়াবান্ধা সড়কের ট্রাফিক পুলিশের শরণাপন্ন হন। এসময় মেখলিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও চ্যাংড়াবান্ধা পুলিশ ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ডেকে আনেন ভারতীয় লোকজন। এসময় ওই কর্মচারীরা আজাদকে ঘিরে ধরে গালিগালাজ করেন এবং ভিডিও ধারণ করেন। কর্মচারীরা আজাদের বিরুদ্ধে ভারতকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ তুলে গালিগালাজ করতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে আজাদকে মেখলিগঞ্জ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশ পরিস্থিতি অনুযায়ী ইমিগ্রেশন পুলিশকে একটি লিখিত দিয়ে পুলিশের গাড়িতে চ্যাংড়াবান্ধায় পাঠায়।

আজাদ আরও জানান, চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে ভারতের ভেতরে না গিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যেতে পরামর্শ দেয়। পরে চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন পুলিশ ভিসা বাতিল করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সময় ওই কর্মচারী ও চালকরা ক্ষমা না চাইলে বাংলাদেশে ফিরে যেতে দেবেন না বলে পুলিশ ও বিএসএফকে জানায়। এসময় ‘জামায়াতি ও বাংলাদেশি আতঙ্কবাদী’, ‘ধর ধর, লাথি মার’ বলে চিৎকার করতে থাকেন ওই কর্মচারী ও চালকরা। পরে বিকেলে আজাদকে ফেরত পাঠায় ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশ।

এ বিষয়ে বুড়িমারী ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসআই) আশরাফুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ভারতে গিয়ে শেয়ারিং গাড়িতে ওঠা নিয়ে চালকের সঙ্গে বির্তক হয় ওই ব্যক্তির। ভারত নিয়ে আপত্তিকর কথা বলায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হন। পরে তাকে ফেরত পাঠান।

রবিউল হাসান/এমএন/এসআর/জেআইএম

Advertisement