দেশজুড়ে

সিলেটে ৮০ শতাংশ হোটেল-মোটেল আগাম বুকিং

সিলেটে ৮০ শতাংশ হোটেল-মোটেল আগাম বুকিং

এবারের ঈদের রেকর্ড ছুটিতে যাচ্ছে দেশ। টানা ৯ দিনের সরকারি ছুটিতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে সিলেটে অন্তত ১৫ থেকে ২০ লাখ পর্যটক আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশ হোটেল-মোটেল বুকিং হয়ে গেছে। ঈদের দিন ঘনিয়ে আসার আগেই শতভাগ বুকিং হবে বলে ধারণা হোটেল ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

এ পরিস্থিতিতে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত সিলেট। এরমধ্যে পর্যটন স্পটগুলোর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে যাতায়াতের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।

প্রকৃতিকন্যা সিলেট সারাদেশের পর্যটকদের কাছে অনন্য। উঁচু-নিচু পাহাড় আর ঢেউ খেলানো চা-বাগান নিমিষে পর্যটকের মন কেড়ে নেয়। মন মাতানো এমন প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিবছর ঈদ কিংবা বিভিন্ন ছুটির দিনে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় ভিড় করেন পর্যটকরা।

সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম- জাফলং, সাদা পাথর, লালাখাল, শ্রীপুর, রাতারগুল, পান্তুমাই, মায়াবতি ঝরনা, জৈন্তিয়া রাজবাড়ী, ডিবির হাওর, বিছানাকান্দি, লোভাছড়া, মাধবকুণ্ড, চেরাপুঞ্জি, জকিগঞ্জে তিন নদী সুরমা-কুশিয়ারা-বরাক মোহনাসহ অসংখ্য চা বাগান।

Advertisement

এছাড়াও সিলেট নগরীর বুকজুড়ে ছুটে চলা সুরমা নদী, আলী আমজদের ঘড়ি, চাঁদনীঘাটের সিঁড়ি, রাজা গৌর গোবিন্দের টিলা, হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার অন্যতম।

এদিকে ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সিলেটের এসব পর্যটন স্পটগুলোতে এখন সাজসাজ রব। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এরমধ্যে শেষ হয়েছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার জাফলং, সাদাপাথর, বিছনাকান্দি, রাতারগুলে বেশি পর্যটক ভিড় করবে। এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন চা-বাগান দেখতে ভিড় জমাবেন পর্যটকেরা। ঈদে অন্তত ১৫ থেকে ২০ লাখ পর্যটক সমাগমের আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, এবার জাফলং পর্যটকদের আকর্ষণ হতে পারে। আগের তুলনায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সেখানে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছি। এ ছাড়া পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহার বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা-পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা একযোগে তৎপরতা চালাবেন। পর্যটকেরা যাতে হয়রানি শিকার না হন সেজন্য উপজেলায় পরিবহন, ঘাট ইজারাদার ও পর্যটনকেন্দ্রের ফটোগ্রাফারদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয়েছে। সে ব্যাপারে তাদের সচেতন করা হয়েছে।

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজ হাসান ফেরদাউস জানান, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি হওয়াতে অন্য বছরের তুলনায় বেশি সংখ্যক পর্যটক সমাগম হবে। তাছাড়া ভারতের ভিসা বন্ধ থাকা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় পর্যটকদের সমাগম বেশি হবে। এরমধ্যে হোটেল-মোটেলগুলো প্রায় ৮০ শতাংশ বুক হয়ে গেছে। আশা করছি এবার ভালো ব্যবসা হবে।

তিনি বলেন, এবারের ঈদ বাজারে যেভাবে মানুষের ঢল নেমেছে তাতে আশা করা যাচ্ছে ঈদ বাজার ও পর্যটন খাতে শতকোটি টাকার ব্যবসা হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে ব্যবসা আরও বেশি হতে পারে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সিলেট অঞ্চলের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। পোশাকধারী ছাড়াও সাদাপোশাকেও ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা থাকবে।

এ বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, ইতোমধ্যে পর্যটন এলাকাগুলোয় প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। পর্যটকদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ একযোগে কাজ করবে।

আহমেদ জামিল/আরএইচ/এমএস