জাতীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা কতদূর?

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা কতদূর?

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও স্বাধীনতার মূল কারিগর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা না থাকা সত্যি বিস্ময়কর। বাংলাদেশের কোনো সরকারই কাজটি করেনি। প্রতিবার তালিকার নামে বেড়েছে শুধু মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা। তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সমাধানে আসেনি কেউ।

Advertisement

বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, বিজয়ের ৫০ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা করতে না পারার বিষয়টি লজ্জার। সরকারগুলোর রাজনীতির অংশ হয়ে গেছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা। বর্তমান তালিকার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা ভুয়া। সুযোগ-সুবিধার লোভে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন অনেকে। এ সুযোগে সরকারগুলোও অনৈতিক প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে। আবার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ কেউ এখনো স্বীকৃতি পাননি, কোনো তালিকায় স্থান হয়নি তাদের।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আসা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা করে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্ত করার পথেই হাঁটছে সরকার। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) গঠন করা হয়েছে, জামুকা আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। জামুকা অধ্যাদেশ হয়ে গেলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ৩৭টি ক্যাটাগরিতে প্রায় চার হাজার মামলা রয়েছে। এ বিপুল সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

তালিকা হয়েছে বহুবার, জন্ম দিয়েছে বিতর্ক

মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে অনেকবার। বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার বয়স, সংজ্ঞা ও মানদণ্ডও পাল্টেছে বারবার।

Advertisement

প্রতিটি সরকার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে শুধু তালিকা বড় করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা মনে করি বর্তমান তালিকার প্রায় অর্ধেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা।- বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা নৌ-কমান্ডো অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অনিল বরণ রায়

১৯৮৮ সালে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে। এ তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার ৮৯২ জন। তবে এর আগে স্বাধীনতার পর ১৯৮৬ সালে প্রথম জাতীয় কমিটির তালিকার ভিত্তিতে এক লাখ দুই হাজার ৪৫৮ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। মূলত ১৯৮৪ সালে এরশাদ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। এর আওতায় বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় গঠিত মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট সংগৃহীত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, চট্টগ্রামের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের (ইবিআরসি) তালিকা এবং ভারত থেকে প্রাপ্ত তালিকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের এ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল। তবে প্রথম এ তালিকার গেজেট হয়নি।

২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব সা’দত হুসাইনকে আহ্বায়ক ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মমতাজ উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে ১৫ সদস্যের জাতীয় কমিটি করা হয়। এই কমিটি দুই লাখ ১০ হাজার ৫৮১ জনকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।

চতুর্থ তালিকায় এক লাখ ৫৪ হাজার ৪৫২ জন মুক্তিযোদ্ধা স্থান পান। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রকাশিত মুক্তিবার্তায় এ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম স্থান পায়।

Advertisement

২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের আমলে গেজেটে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখ ৯৮ হাজার জন। বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০২৩ সালে ষষ্ঠ দফার চূড়ান্ত (সমন্বিত) তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখ ৮ হাজার ৮৫১ জন। এর মধ্যে খেতাবপ্রাপ্ত, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ১২ হাজার ৫৭৯ জন।

বর্তমানে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন। দুই ঈদে ১০ হাজার টাকা করে আরও ২০ হাজার টাকা ভাতা পান। এছাড়া বিজয় দিবসে পাঁচ হাজার টাকা এবং বাংলা নববর্ষে দুই হাজার টাকা ভাতা পান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

আরও পড়ুন সরকারি সুবিধা পায় না গেজেটভুক্ত ১৩৯৯ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সঠিক তালিকা ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি চান মুক্তিযোদ্ধারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে উদ্যোগ, রাজাকারের তালিকায় ‘না’

সব ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের নামের আগে ‘বীর’ শব্দ ব্যবহারের বিধান রেখে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এছাড়া ২০১২ সালে সরকার এক আদেশে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে যারা মুক্তিযোদ্ধা, তাদের ক্ষেত্রে অবসরের বয়স ৬০ বছর করে। সাধারণভাবে সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরে যাওয়ার বয়স ৫৯ বছর।

পূর্ণাঙ্গা তালিকা না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ

স্বাধীনতার এত বছর পরও পূর্ণাঙ্গ তালিকা না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বলছেন এটি দুঃখজনক ও একটি দেশের জন্য লজ্জার বিষয়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা নৌ-কমান্ডো অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অনিল বরণ রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রতিটি সরকার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে শুধু তালিকা বড় করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা মনে করি বর্তমান তালিকার প্রায় অর্ধেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা।’

অপারেশন জ্যাকপটের একজন নৌ-কমান্ডো, যার বাড়ি বাগেরহাটে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগে ১০ বছর তার ভাড়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। তিনি মারা যাওয়ার পর প্রমাণিত হয় যে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।–বীর প্রতীক মো. শাহজাহান কবির

তিনি বলেন, ‘গত সরকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদে ডিসিকে জেলা কমান্ডার ও ইউএনওকে উপজেলা কমান্ডার বানিয়ে গেছে। এখন আশা করি মুক্তিযোদ্ধারাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন, সেই পদক্ষেপ নেবে বর্তমান সরকার। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হচ্ছে বলে শুনেছি। হলে আমরা সবাই জানি কোন থানায় কে ভুয়া, কাকে ঢোকানো হয়েছে সেগুলো বাদ দিতে হবে।’

‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কারণে আমরা মানুষের কাছে বেশি ছোট হয়ে গেছি। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তো মূল্যবোধটা নেই। তারা এসেছে ধান্দা করার জন্য। তারা সুবিধা নেওয়ার জন্য সনদ নিয়েছে। তাদের দিয়ে মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হলে আশা করছি এরা থাকবে না।’

তবে এখনো কিছু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকায় নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যদিও এরা খুব বেশি হবে না। তারপরও এদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একজন মুক্তিযোদ্ধা যে দলই করুক তাকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।’

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা রাজনীতিবিদদের কারণে অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে মন্তব্য করে অনিল বরণ রায় বলেন, ‘এজন্য আমরা দায়ী না। আমরা তো রাষ্ট্র পরিচালনায় আসিনি। রাজনীতিবিদরাই দেশ চালিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই একটা দেশ হয়েছে, পতাকা হয়েছে। এটাকে অস্বীকার করা যাবে না। যারা অস্বীকার করবে তাদেরই ক্ষতি হবে।’

বীর প্রতীক মো. শাহজাহান কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘যারা মাঠে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন তাদেরই মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কথা। কিন্তু সশস্ত্র যুদ্ধ না করেও অনেকে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা চাই, যারা সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন বা যারা এ সংশ্লিষ্ট তারাই শুধু মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পান। এটা সব প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারই কথা।’

তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা সোয়া লাখ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা থাকতে পারেন, বাকিরা ভুয়া। আপনি গ্রামে গেলে যারা বয়স্ক তাদের জিজ্ঞাসা করবেন, আগে কয়জন মুক্তিযোদ্ধা ছিল, এখন কতজন হয়েছেন। সব জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এখন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দাপট বেশি। তাদের দেখে আমাদের মনে রক্তক্ষরণ হয়। অনেক প্রভাবশালী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন।’

‘তবে অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এখনো তালিকায় আসেননি। গরিব, টাকা দিতে পারেননি তাই মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম ওঠেনি এমন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এ বিষয়টি সরকারকে দেখতে হবে।’

শাহজাহান কবির বলেন, ‘অপারেশন জ্যাকপটের একজন নৌ-কমান্ডো, যার বাড়ি বাগেরহাটে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগে ১০ বছর তার ভাড়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। তিনি মারা যাওয়ার পর প্রমাণিত হয় যে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’

এ বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, ‘যত সরকার এসেছে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রাজনীতি করেছে। কোনো সরকারই রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্ত করেনি। সরকারগুলো আন্তরিকভাবে চাইলেই এটা করা সম্ভব ছিল। আমরা মনে করি, তালিকায় থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের অর্ধেকই ভুয়া।’

বিগত সময়ে জামুকা (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল) ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরির কারখানা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘টাকা নিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সরকার চাইলে এখনো তার ম্যাকানিজম ব্যবহার করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে চূড়ান্ত একটি তালিকা করতে পারে।’

যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছেন, তারা স্বেচ্ছায় চলে গেলে ভালো- সেই ঘোষণা আমরা দিয়েছি। কিছু লোক ক্ষমা চেয়ে আবেদনও করেছেন। তবে খুব বেশি নয়। আর না গেলে যাচাই-বাছাইয়ে ধরা পড়লে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী

সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) নাসির উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গত ১৬ বছরে প্রচুর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে। ইউনিট ও থানা কমান্ডারদের চেহারাই দেখবেন অন্যরকম। তেলতেলে চেহারা। এদের টাকা-পায়সা আছে। তারা মূলত উৎকোচ নিয়ে সুপারিশ করেছে, যা জামুকায় অনুমোদন হয়েছে। সব ইউনিট কমান্ডার বাতিল করতে হবে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ইউনিট কমান্ডার করতে হবে।’

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘নির্বাচিত সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সব তালিকা যাচাই-বাছাই করুক। কোনো সরকার আন্তরিক হলে এটা করতে খুব বেশি দিন লাগে না। অথবা আগের সব তালিকা বাতিল করে নতুন করে করা যেতে পারে। নথিপত্র আছে, এটা করতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’

যা বলছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়

মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করার বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘জামুকার নতুন কমিটি করা হয়েছে। কে মুক্তিযোদ্ধা আর কে না- সেই যাচাইয়ের কাজটি জামুকা করে। এ বিষয়ে তারা খুব আন্তরিকভাবেই কাজ করছেন। তারা শুরু করেছেন, আশা করি একটা ভালো ফল আমরা পাবো।’

তিনি বলেন, ‘যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছেন, তারা স্বেচ্ছায় চলে গেলে ভালো- সেই ঘোষণা আমরা দিয়েছি। কিছু লোক ক্ষমা চেয়ে আবেদনও করেছেন। তবে খুব বেশি নয়। আর না গেলে যাচাই-বাছাইয়ে ধরা পড়লে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’

সচিব বলেন, ‘এ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের যত তালিকা হয়েছে, সব তালিকা এক জায়গায় করে কোথায় গ্যাপ আছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেটা নিয়ে জামুকা কাজও করছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারাই বলতে পারবেন তাদের সঙ্গে কারা যুদ্ধ করেছেন।’

‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০২২’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে জানিয়ে ইসরাত চৌধুরী বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর এটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য যাবে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, পরবর্তীসময়ে ব্যবস্থা নেবে জামুকা।’

ইসরাত চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক মামলা রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। চূড়ান্ত তালিকা করার জন্য সেগুলো নিষ্পত্তি করার বিষয় আছে। সবাই তো তাদের মতো করে তাদের লোকদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ দিয়েছে। এজন্যই ঝামেলাগুলো হচ্ছে।’

তালিকার বাইরে থাকা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সচিব বলেন, ‘কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধার সপক্ষের দলিলপত্রগুলো যত্ন করে রাখতে পারেননি। তবে জামুকা এ বিষয়টিও বিবেচনায় নেবে। কারণ কেউ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হলে তার সঙ্গে যোদ্ধারা কিংবা তার এলাকার লোকজন তো বলবেন যে তিনি যুদ্ধ করেছেন। এভাবে তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।’

আরএমএম/এএসএ/এএসএম