দেশজুড়ে

আদালতে ভুয়া আসামি দাঁড় করিয়ে জামিন, আটক ৪

আদালতে ভুয়া আসামি দাঁড় করিয়ে জামিন, আটক ৪

লক্ষ্মীপুরে আদালতে ভুয়া ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে প্রবাসে থাকা আসামিদের জামিন নেওয়ার ঘটনায় আইনজীবী সহকারীসহ চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মো. নোমান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

Advertisement

আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) আব্দুল আহাদ শাকিল পাটোয়ারী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চারজন আসামি আত্মসমর্পণ করে আদালত জামিনের আবেদন করে। আদালত জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এপিপি আরও জানান, ভুয়া ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে জামিন নেওয়ার ঘটনায় ১৫ জানুয়ারি জুডিসিয়াল ১ নম্বর আদালতের (রামগঞ্জ) ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইসমাইল বাদী হয়ে সদর আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনায় তাদের নামে মামলাটি করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আইনজীবী লুৎফুর রহমান রহিম গাজী ভবিষ্যতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাবে না বলে আদালতে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। এতে আদালত তাকে ঘটনা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

গ্রেফতাররা হলেন, আইনজীবী সহকারী আবুল কাসেম, জামিনের তদবিরকারক আনোয়ার হোসেন, জামিনপ্রাপ্ত ভুয়া আসামি সাইফুল ওরফে গাল কাটা সাইফুল ও ফরহাদ। এর মধ্যে সাইফুল রামগঞ্জের সোন্দড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে, ফরহাদ একই এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে, আবুল কাশেম পাটোয়ারী রামগঞ্জের চন্ডিপুর গ্রামের আবদুর রশিদ পাটোয়ারীর ছেলে ও আনোয়ার স্থানীয় আব্দুর রবের ছেলে।

Advertisement

আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের সোন্দড়া গ্রামের আবদুল খালেকদের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে তাজুল ইসলাম খোকাদের জমিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে ২০২৩ সালে আদালতে মামলা হয়। ২০২৪ সালের ১৯ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান আদালতে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

তারা হলেন, তাজুল ইসলাম খোকা, সজীব, আনোয়ার হোসেন ও সাইফুল ইসলাম শুভ। এদিকে ঘটনা পর আসামি সজিব সৌদি আরব ও সাইফুল কাতার চলে যায়। গেল বছরের ৩০ জুন আসামি খোকা ও আনোয়ার জামিন নেয়। তখন সজিব ও সাইফুলের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক। আসামিরা বিদেশে রয়েছেন। কিন্তু গত ৬ নভেম্বর মামলার ২ ও ৪ নম্বর আসামির স্থলে ভিন্ন ব্যক্তিদের রামগঞ্জ আমলি আদালতে উপস্থিত করা হয়। পরে আদালত তাদের জামিনে মুক্তির আদেশ দেয়।

ঘটনাটি জানতে পেরে গত ৮ ডিসেম্বর বাদী শামছুর নেছা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি সজিব ও সাইফুলকে সশরীরে হাজির হওয়ার জন্য ও তাদের জামিনের আদেশ বাতিল করতে আবেদন করে। একইসঙ্গে আসামিদের নিযুক্ত কৌঁসুলি ও স্থানীয় জামিনদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা জানিয়েছেন। এতে আদালতের বিচারক ঘটনাটি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চান তিনি। পরে ২৯ ডিসেম্বর আসামিদের আইনজীবী রহিম গাজী আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করেন। একই ব্যাখ্যা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে দিয়েছেন।

এতে তিনি জানান, আইনজীবী সহকারী আবুল কাশেম দুজন লোককে এনে আসামি হিসেবে আদালতে উপস্থিত করায়। পরে তাদের জামিন করানো হয়। তিনি আসামিদের ছিনতেন না।

Advertisement

কাজল কায়েস/আরএইচ/এএসএম