দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর দিকে দিয়ে শীর্ষ জেলা ফেনীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ফুটপাত ও অভিজাত শপিংমলগুলোতে চলছে বেচাকেনার ধুম। তবে এবার পোশাকের দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
Advertisement
জেলা শহরে ছোট-বড় মিলে প্রায় ১০ হাজার দোকান রয়েছে। এসব দোকানে হাজার থেকে ১২০০ কোটি টাকা বিক্রির প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
সরেজমিন দেখা যায়, দোকানগুলোতে বাহারি পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাজার রয়েছে ভারতীয় ও পাকিস্তানি কাপড়ের দখলে।
ঈদে পণ্য বিক্রি বাড়াতে গ্র্যান্ড হক টাওয়ার, শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণিবিতান, গার্ডেন সিটি, তমিজিয়া মার্কেট, এসি মার্কেট, বড় বাজার ও শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের নামিদামি ব্র্যান্ডের শোরুমগুলো হরেক রকম লাল, নীল বাতি আর বাহারি রকমের নজরকাড়া আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে সাজানো হয়েছে। ২০ রমজানের পর থেকে বেচাকেনার ধুম পড়েছে।
Advertisement
ক্রেতারা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার ঈদে মেয়েদের কাছে ভারতের চেয়ে পাকিস্তানি পোশাকের চাহিদা বেশি। শাড়ির মধ্যে টাঙ্গাইল শাড়ি, তাঁতের শাড়ি ও জামদানি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে বেশি।
গ্র্যান্ড হক টাওয়ারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেচাবিক্রি শুরুতে কম হলেও ১৮ রমজানের পর থেকে বেড়েছে। তবে মার্কেটগুলোতে এখনো ক্রেতার সংখ্যা কম। শহরের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামিদামি দোকানগুলোর দিকে ছুটছেন ক্রেতারা। এজন্যই আমাদের বিপণিবিতানে ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা কম।
শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণিবিতানের একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৮-২০ রমজান পর্যন্ত ক্রেতা কম ছিল। তবে এবার বিভিন্ন পোশাক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হবে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এবার জামা-কাপড়ের দাম বেশি। তাই বাজেট অনুযায়ী ঈদের মার্কেট করতে পারছেন না।
Advertisement
পরিবারের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে এসেছেন ছকিনা আক্তার রুনা। অনেকগুলো মার্কেট ঘুরেছেন। তবে বাজেট অনুযায়ী কিনতে পারছিলেন না। তিনি বলেন, ‘এই মার্কেট ওই মার্কেট ছুটছি। বাজেটে পোষালেই কিনবো।’
উম্মে তানজিলা হোসেন রিতু নামের আরেকজন ক্রেতা বলেন, পরিবারের আটজনের জন্য জামা কিনেছেন। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি।
ফেনী শহর কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল বলেন, বেচাবিক্রি নিয়ে শুরুতে ব্যবসায়ীরা হতাশ হলেও ১৫ রমজানের পর থেকে বেড়েছে। বন্যায় ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি হয়েছিল, আশা করছি ঈদের বাজারে বিক্রি করে তা কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
ফেনী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মুশফিকুর রহমান পিপুল জানান, রেমিট্যান্স খ্যাত এ জেলায় শহরে ছোট-বড়, মাঝারি মিলে ১০ হাজারের বেশি দোকান রয়েছে। এসব দোকানে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। এবারের ঈদে এক হাজার থেকে ১২০০ কোটি টাকার পণ্য বেচাকেনা হবে বলে ধারণা।
এদিকে রাস্তাঘাট ও মার্কেটগুলোতে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি ঠেকাতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান ফেনী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, মাঠে সাদা পোশাকের পাশাপাশি পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এসআর/এএসএম