জাতীয়

দেশের এ পরিবর্তন মেনে নিতে পারছে না আওয়ামী লীগ: রিজওয়ানা হাসান

দেশের এ পরিবর্তন মেনে নিতে পারছে না আওয়ামী লীগ: রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পতিত আওয়ামী লীগের অর্থে পুষ্টরা এখনো গুজব-অপপ্রচার করছেন। তারা এখনো এ পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারছেন না।

Advertisement

তিনি বলেন, বিগত সময়ে প্রচুর অপতথ্য ও ভুয়া তথ্য প্রচার হয়েছে। ক্ষমতায় থাকার সময় যখন অর্থনীতি টালমাটাল হয়েছে তখন রাসেল ভাইপারের গল্প, ৫ আগস্টের পরে হুট করে ডাকাত-ডাকাত বলে অপপ্রচার করে মানুষকে ভিন্নধারায় ব্যস্ত রাখা হয়েছে। এর সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে এসব প্রচার করেছে গণমাধ্যম।

রোববার (২৩ মার্চ) গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে আয়োজিত সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) সম্মেলন কক্ষে এ সংলাপ আয়োজন করা হয়।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশের অনেক গণমাধ্যমের মালিক নিজের ব্যবসা টেকাতে গণমাধ্যম গড়ে তুলেছেন। তাদের একটি অসৎ উদ্দেশ্য শুরু থেকে ছিল। ফলে বুঝতে হবে কাদের কাছে প্রকৃত সত্য মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। তারা অনেককে টার্গেট করে। ভুল তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের মনে কনফিউশন তৈরি করে। বারবার বলতে বলতে মিথ্যাকে সত্য বানাতে চায়।

Advertisement

তিনি বলেন, দেশের অনেক গণমাধ্যম এ জুলাইয়ের অন্দোলন মেনে নেয়নি। তারা ৫ আগস্টের একদিন আগেও ছাত্রদের পক্ষে সংবাদ প্রচার করেনি। এরপর এখন পাল্টে গেছে। তবে তাদের মধ্যে কোনো অনুতাপ নেই। তারা এখনো বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপপ্রচার করতে সফল হচ্ছে, কারণ তাদের অনেক অর্থ আছে।

সরকারের এ উপদেষ্টা আরও বলেন, এ রমজানে দেশে জিনিসপত্রের দাম অনেক কম। মাত্র ছয়-সাত মাসে এক অপ্রস্তুত সরকারের জন্য এটা একটি বড় সফলতা। কিন্তু সেটা বেশিভাগ গণমাধ্যম প্রচার করছে না। লোডশেডিং নেই, সেটা কেউ বলছে না।

আরও পড়ুন রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন নয়, ৭১ ও ২৪ এক কাতারে রাখায় দ্বিমত বিএনপির  ঢাকায় হবে ঈদ মিছিল, বসবে মেলা: আসিফ মাহমুদ 

অনুষ্ঠানে পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, বিগত সরকারের সময় প্রতিটি বিষয়ে ভুল তথ্য বা বাড়িয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে, যেভাবে এ দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এখন বোঝা যাচ্ছে প্রকৃত অর্থনীতির অবস্থা। সেটা আমাদের জন্য সমস্যা হবে, আমরা এখন এ নিয়ে দুর্গতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছি।

এখন নতুন সরকারের সময়ও অনেক অপপ্রচার হয়েছে। সেটা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার জন্য করছে একটি পরাজিত মহল। যা উন্নয়ন কাজ ব্যাহত করছে। বাংলাদেশের সম্পর্কে এখন সারাবিশ্বে অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

Advertisement

যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। অনেক টেলিভিশনের নামে সামাজিক মাধ্যমে পেজ খুলে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমরা ব্যতিব্যস্ত থাকছি, সেগুলো আমাদের নয় সেটা প্রমাণ করতে।

আমি মনে করি এ সরকারের বড় ভুমিকা রাখতে হবে। দিন দিন এটা আরও বাড়ছে। একটা পরাজিত গোষ্ঠী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য সেটা করছে।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ আগে মিথ্যা উন্নয়নের তথ্য ছড়িয়েছে। এখন পতনের পর অপতথ্য ও ভুয়া তথ্য সুনামির মতো প্রচার হচ্ছে। মূলধারার অনেক মিডিয়া নানান ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে ভুল তথ্য প্রচার করে এখন তারা গুরুত্ব হারিয়েছে। ফলে এখন মূলধারার মিডিয়া ভাইরাল হওয়ার নেশায় যা-তা ছড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, ভারতের মূলধারার অনেক মিডিয়া বাংলাদেশে গুজব ছড়াচ্ছে। রিপাবলিক বাংলা বা এমন আধা ডজন প্রতিষ্ঠান, যারা পতিত সরকারের বন্ধু চ্যানেল। এটা রাজনৈতিকভাবে এখন মোকাবিলা করতে হবে। সরকারি উদ্যোগ লাগবে।

এনএইচ/কেএসআর/জিকেএস