বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস থেকে গণিত বিষয় বাদ দেওয়ার সুপারিশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ গণিত সমিতি। একই সঙ্গে গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয় বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
Advertisement
রোববার (২৩ মার্চ) সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে এ দাবি জানিয়েছে গণিত সমিতি। এ সময় সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাবুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সম্প্রতি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস পরিবর্তন করে ছয়টি আবশ্যিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে পরীক্ষার নম্বর পুনর্বণ্টনপূর্বক গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয় সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন ছয়টি আবশ্যিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে নম্বর পুনর্বণ্টনের যে সুপারিশ করেছে, তাতে গণিতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয় বিষয় নেই। এটি বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক সমাজ গঠনের পরিপন্থি বলে প্রতীয়মান হয়।
আরও পড়ুনবিসিএসে মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ‘সবাই’ হবেন নন-ক্যাডার!৪৭তম বিসিএসে পৌনে ৪ লাখ আবেদন, প্রিলি হতে পারে জুনেসাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন বিসিএস নবম গ্রেডের মতো দেওয়ার সুপারিশএতে বলা হয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশে গণিতের ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গণিত ছাড়া অচল। গাণিতিক হিসাব-নিকাশ ব্যতীত একটি রাষ্ট্রের বাজেট থেকে শুরু করে যে কোনো ছোট-বড় দেশীয় বা বৈশ্বিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা অসম্ভব। কম্পিউটার বিজ্ঞান, পদার্থ ও রসায়ন ইত্যাদি বিজ্ঞানের সব বিষয়ের সারবস্তু হলো গণিত। গণিত একটি মৌলিক ও অপরিহার্য বিষয়, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ নীতি নির্ধারণ, আর্থিক পরিকল্পনা, পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণ এবং সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গণিত ও মানসিক দক্ষতার চর্চা একজন সরকারি কর্মকর্তাকে যৌক্তিক ও বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনায় দক্ষ করে তোলে। প্রশাসনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে, জনশুমারি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিশ্লেষণ, কর ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে গণিত অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
Advertisement
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, যারা গণিত চর্চা করেন বা গণিতের জ্ঞান যাদের মজবুত, প্রতিনিয়ত তাদের মেধার বিকাশ ঘটে ও বিশ্লেষণ করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে অভিজ্ঞতা যুক্ত হলে প্রার্থী আরও চৌকস হয়। বিসিএস পরীক্ষার্থীদের গণিতের জ্ঞান থাকা আবশ্যক এবং এ বিষয়ে তার দক্ষতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। গণিত বিষয়কে শুধু নম্বর বেশি পাওয়ার বা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত না করে এটিকে মেধাবৃত্তিক বিশ্লেষণ করার দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করার জন্য দৃঢ় আহ্বান জানাচ্ছি।
এএএইচ/ইএ/জেআইএম