সংবাদপত্র ও বাকস্বাধীনতা স্বাধীনতা গণতন্ত্র অর্থহীন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। ‘দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ’ পত্রিকার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সংবাদপত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার প্রকৃত সুন্দর হলো বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ব্যতীত গণতন্ত্র অর্থহীন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র যখন বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে তখনই বলা যায় যে, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে গণতন্ত্র গুণগত এবং দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা এবং আমাদের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা তথা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিচার বিভাগের সঙ্গে সংবাদপত্রের ইতিবাচক সম্পর্কের উপর জোর দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় বিচার বিভাগের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা পায় না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন সাংবাদিকরা। এসকে সিনহা বলেন, কিছু কিছু সংবাদপত্র ব্যক্তিগত বিদ্বেষ, একপেশে খবর, অদূরদর্শী এবং পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর জন্য নৈতিকতা বিবর্জিত সংবাদ প্রচার করে বিচার বিভাগ তথা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। অনেক সময় মিডিয়া ট্রায়াল এর ফলে বিচারক এবং বিচারপ্রার্থী জনগণ বিব্রত হয় যা অনভিপ্রেত এবং অনাকাঙ্খিত।বিচার বিভাগের ত্রুটির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের সমালোচনায় বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে। বিচার বিভাগও ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। আশাকরি, বিচার বিভাগের কার্যক্রম সম্পর্কে সংবাদ ও মিডিয়া কনস্ট্রাকটিভ অ্যান্ড ফেয়ার (গঠনমূলক ও স্বচ্ছ্ব) সমালোচনা করবে। নারীর ক্ষমতায়ন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায়ও সংবাদপত্রের ভূমিকা উল্লেখ করে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, নারী ও শিশু অধিকার ও মানবাধিকার বিষয়ে আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্র এখনো যথেষ্ট যত্নবান নয়। ফলে অহরহ নারী অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। একটি সভ্য সমাজে যা কোনভাবেই কাম্য নয়। প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার প্রকাশক মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও পত্রিকার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইদ খান।এফএইচ/এসকেডি/এমএস
Advertisement