দেশজুড়ে

হাওরে ছয় মাসে উৎপাদন হবে ১০ লাখ টন দুধ

হাওরে ছয় মাসে উৎপাদন হবে ১০ লাখ টন দুধ

শুকনো মৌসুমে হাওরাঞ্চলের চারদিকে দেখা যায় সবুজের সমারোহ। মাঝখান দিয়ে চলে গেছে ‘অলওয়েদার’ সড়ক। সড়কের দুই প্রান্তে দিগন্ত বিস্তৃত পতিত জমি। যেখানে শতশত গরুর অবাধ বিচরণ। এ যেন গো-চারণভূমি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এমন অপরূপ দৃশ্যের দেখা মিলবে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে।

Advertisement

বোরো চাষ, মাছ শিকারের পাশাপাশি ছয় মাস গবাদিপশু পালন করেন এখানকার প্রান্তিক কৃষকরা। এসময় পুরো হাওরজুড়ে ঘাসের আধিক্য থাকায় বিনা খরচে গবাদি পশু লালন-পালন করে উপকৃত হোন প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করা এসব মানুষ। এই ছয় মাসে হাওরাঞ্চল থেকেই উৎপাদন হয় ১০ লাখ টন দুধ ও ছয় হাজার টন মাংস।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, বর্ষাকালে হাওরে গবাদি পশু লালন-পালন কমে যায়। বর্ষায় ১০ হাজার টন দুধ ও ৪ হাজার ৭০০ টন মাংস উৎপাদন হয়। আর শুকনোর সময় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে দুধের পরিমাণ দাড়ায় ১০ লাখ টন। পাশাপাশি ছয় হাজার টন মাংস উৎপাদন হয় কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে।

ইসমাইল হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, মিঠামইন উপজেলার বিস্তীর্ণ হাওর জুড়ে এখন গবাদি পশুর বিচরণ। গরু-মহিষগুলো এই হাওরের স্থায়ী বাসিন্দা নয়। ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন প্রান্তিক কৃষকরা। রোজ সকালে চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরের গ্রাম থেকে গরুগুলোকে আনা হয়। আবার গরুগুলোর জন্য হাওরেই বানানো হয় অস্থায়ী তাঁবুর মতো ডেরা। শুকনা মৌসুমে হাওরে অস্থায়ীভাবে গরু লালন-পালনের পুরোনো প্রচলিত একটি পদ্ধতি হচ্ছে এই ‘বাথানব্যবস্থা’। বিকেলে গরুর ছোট ছোট পালের দেখা মেলে এখানে। একেক পালে ৫-১০টি গরু থাকে।

Advertisement

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র পণ্ডিত জানান, পানি কমে যাওয়ার পর শুকনো মৌসুমে হাওরের বুকে বিভিন্ন জাতের ঘাস বেড়ে ওঠে। সেই ঘাসকে পুঁজি করে ছয় মাস গরু লালন-পালন করে থাকেন এখানকার কৃষকরা। প্রাকৃতিক উপায়ে সবুজ ঘাসের মাধ্যমে মোটাতাজা করায় অল্প খরচে অধিক লাভ হয় তাদের। জেলায় উৎপাদিত দুধ ও মাংসের ১৫ শতাংশ আসে হাওরাঞ্চল থেকে। হাওরে প্রাকৃতিক ঘাস খাওয়ানোর মাধ্যমে নিরাপদ পদ্ধতিতে দুধ ও মাংস উৎপাদনে প্রাণী সম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়।

এসকে রাসেল/জেডএইচ/জিকেএস