দেশজুড়ে

ময়মনসিংহে মেয়েদের পছন্দ হিরামান্ডি-সারারা

ময়মনসিংহে মেয়েদের পছন্দ হিরামান্ডি-সারারা

ঈদ এলেই নামি ব্র্যান্ডের পোশাকের প্রতি আলাদা আকর্ষণ থাকে ক্রেতাদের। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিপুল পরিমাণ নতুন পোশাক দোকানে তোলা হয়। এরমধ্যে বিভিন্ন নামের বিদেশি পোশাকের থাকে আলাদা চাহিদা। এগুলো একচেটিয়া বিক্রি হয়। এবার ময়মনসিংহের ঈদ বাজারে মেয়েদের পোশাকের মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে হিরামান্ডি ও সারারা।

Advertisement

এছাড়া গারারা, ফার্সিকাট, মুসকাল ও আফগান থ্রি-পিসেরও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। বাহারি নামের এসব পোশাক কিনতে বিশেষ আগ্রহ দেখা গেছে তরুণীদের মাঝে। এক দোকানে কাঙ্ক্ষিত পোশাক না পেলে ছুটছেন অন্য দোকানে। দোকানিদের সঙ্গে দামাদামি করে পছন্দের পোশাক কিনে বাড়ি ফিরছেন তারা।

সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন শপিংমলে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেকটি দোকানে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের পোশাকের সমাহার রয়েছে। বেচাকেনায় যেন দম ফেলার সময় পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। তবে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের হিরামান্ডি, ফার্সি, সারারা, গারারা, ফার্সিকাট, মুসকাল ও আফগান থ্রি-পিসে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। অন্যান্য থ্রি-পিসের চেয়ে এগুলোর দাম তুলনামূলক বেশি হলেও ক্রেতারা এসব পোশাকের দিকেই ঝুঁকছেন।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঈদে বিভিন্ন নামের বা ব্র্যান্ডের পোশাক জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকে। এবছরও এমনটি হয়েছে। মেয়েদের রুচিশীল পোশাকের চাহিদা বিবেচনায় দোকানে পোশাক তোলা হয়েছে। এরই মধ্যে বেচাকেনা জমজমাট হয়ে উঠেছে। সময় যত গড়াবে, বিক্রি তত বাড়বে।

Advertisement

আবুল কালাম আজাদ অন্তত ১৫ বছর বাড়িপ্লাজা শপিংমলে পোশাক বিক্রি করেন। সফল পোশাক বিক্রেতা হিসেবেও পরিচিত তিনি। পোশাক বিক্রির ফাঁকে কথা হচ্ছিলো তার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, একেক দোকানে একেক ধরনের পোশাক তুলেছেন বিক্রেতারা। আমি হিরামান্ডি ও ফার্সি থ্রি-পিস একচেটিয়া বিক্রি করছি। বিভিন্ন বয়সী (ছোট-বড়) মেয়েদের জন্য দামেও রয়েছে ভিন্নতা। একেকটি হিরামান্ডি থ্রি-পিস সর্বনিম্ন চার হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ও একেকটি ফার্সি সর্বনিম্ন দুই হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন:

বরিশালে ছেলেদের পছন্দ পাঞ্জাবি, মেয়েদের পাকিস্তানি থ্রি-পিস সিল্কে আগ্রহ ক্রেতাদের, অর্ধশত কোটি টাকার বেচাকেনার আশা

ব্যস্ততার ফাঁকে জাহিদুর রহমান নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, হিরামান্ডি ও ফার্সির পাশাপাশি সারারা, গারারা, ফার্সিকাট, মুসকাল ও আফগান থ্রি-পিস দোকানে বেশি তোলা হয়েছে। এগুলো একচেটিয়া বিক্রি হচ্ছে।

তিনি বলেন, সারারা ও গারারা পাকিস্তানি থ্রি-পিস। হিরামান্ডিকে ভারতীয় পোশাক বলা হলেও মূলত বাংলাদেশে তৈরি হয়। অনেক পোশাক বাংলাদেশে তৈরি করে ভিন্ন দেশের নামে বিক্রি করা হয়। কারণ, অর্জিনাল ওই দেশের পোশাক বৈধপথে দেশে এনে বিক্রি করলে দাম বহুগুণে বেড়ে যেত। সচেতন ক্রেতারা এসব ঠিকই বুঝে। আমরাও চাহিদা বিবেচনায় ন্যায্য দামে বিক্রি করে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে পারছি।

Advertisement

বাবা-মায়ের সঙ্গে পোশাক কিনতে আসা কলেজপড়ুয়া রায়না আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, শপিংমলে এসে দেখি বিভিন্ন নামের পোশাক বিক্রির ধুম পড়েছে। আমার কাছে ফার্সি থ্রি-পিস দেখতে ভালো লেগেছে। আমি একটা কিনেছি। দাম নিয়েছে চার হাজার টাকা।

কয়েকজন মেয়ে একসঙ্গে পোশাক দেখছিলেন। তাদের মধ্যে পিথিলা নামের একজন বলেন, ঈদে ব্যাপক আকর্ষণীয় পোশাকের সমাহার রয়েছে। আমরা চারজন চাচাতো বোন মিলে বড় ভাইয়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে এসেছি। একেকজন একেক নামের পোশাক দেখছি। কেউ পছন্দ করেছে হিরামান্ডি, কেউ ফার্সি, আবার কেউ সারারা। আমি আরও কিছুক্ষণ দেখবো। এরপর পছন্দমতো কিনবো।

আরও পড়ুন:

ঈদের আমেজ নেই পাবনার লুঙ্গি বাজারে টাঙ্গাইলের ঈদবাজারে পাকিস্তানি পোশাকে ঝোঁক ক্রেতাদের

পিথিলার সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা তার ভাই আশরাফুল আলম বলেন, শপিংমলে উপচে পড়া ভিড়। সম্প্রতি ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে চুরি-ছিনতাইও বেড়েছে। তাই তাদের সঙ্গে আমি এসেছি। ঈদে কেনাকাটা করতে আসা লোকজনের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের টহল জোরদার করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার শপিংমলগুলোর সামনে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া শহরজুড়ে পুলিশ নজরদারি করছে। নিয়মিত চোর ও ছিনতাইকারীদের আটক করা হচ্ছে। নির্বিঘ্নে ঈদ কেনাকাটা নিশ্চিত করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদেরও সচেতন থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ঈদের কেনাকাটার এই সময়ে স্বর্ণালংকার না পড়ে আসা ভালো। এছাড়া শপিংমলে কিংবা আসা-যাওয়ার রাস্তায় অপরিচিত কারও সঙ্গে হঠাৎ পরিচিত হওয়ার দরকার নেই। কিছু দিলে খাওয়া যাবে না। প্রত্যেকটি মোড়ে মোড়ে পুলিশ রয়েছে। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে পুলিশের শরণাপন্ন হতে হবে।

এমএন/এমএস