ঈদকে সামনে রেখে খুলনার দর্জিপাড়ায় চলছে অনবরত পোশাক সেলাইয়ের কাজ। দম ফেলার সময় নেই দর্জিদের। গভীর রাত পর্যন্ত কাপড় কাটা আর সেলাই কাজ চলছে সমান তালে। ঈদ ঘনিয়ে আসায় দর্জিদের ব্যস্ততাও বাড়ছে। অনেক দোকানে নতুন অর্ডারও নেওয়া বন্ধও করেছেন দর্জিরা।
Advertisement
খুলনার বিভিন্ন দর্জির দোকান ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে একদিকে চলছে কাপড় কাটার কাজ। অন্যদিকে চলছে অনবরত সেলাই। কারিগররা সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাপ নিয়ে সেলাইয়ের জন্য স্তূপ করে রাখা হচ্ছে কাপড়। আর কারিগররা তা সেলাই করছেন। অনেক টেইলার্সে আবার ফিনিশিং কাজের জন্য অস্থায়ী নতুন কারিগর রাখা হয়েছে। গ্রাহকরা নিত্যনতুন বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক বানাতে আসছেন। শার্ট-প্যান্টের সঙ্গে ছেলেদের পাঞ্জাবির অর্ডারও অনেক।
প্রতি পিস প্যান্ট সেলাই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, সালোয়ার কামিজ ২৫০-৪০০ টাকা, ব্লাউজ ১৫০, ব্লাউজ (ডবল) ৩০০, পেটিকোট ১০০ টাকা, ম্যাক্সি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, গাউন ৩০০-৪০০ টাকা, বোরকা ৩০০-৩৫০ টাকা এবং পাঞ্জাবি ৪০০ টাকা মজুরি রাখা হচ্ছে।
ফেরিঘাট মোড়ের নূর টেইলার্সের নূর ইসলাম জানান, রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকে পোশাক তৈরির অর্ডার আসা শুরু হয়েছে। গত দশ দিনে প্রায় সাড়ে চারশ অর্ডার এসেছে। এখনো প্রায় দেড়শ অর্ডারের সেলাইয়ের কাজ চলছে। চাপ বুঝে অর্ডার নিচ্ছি। চাপ সামলাতে রমজান মাসে অস্থায়ী কারিগর রাখা হয়েছে।
Advertisement
নিক্সন মার্কেটের টেইলার্স সুকলা দেব বলেন, ক্রেতারা পছন্দের পোশাক তৈরির জন্য থানকাপড় নিয়ে আসছেন। শার্ট, প্যান্টের পাশাপাশি পাঞ্জাবি তৈরির চাপ অনেক। প্রতিদিন গড়ে ১৫টা অর্ডার নিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, রাত তিনটা-চারটা অব্দি সেলাইয়ের কাজ করছেন কারিগররা। সঠিক সময়ে ডেলিভারি না দিলে কাষ্টমারের মন রক্ষা করা দুষ্কর হয়ে পড়বে।
ডাকবাংলো মার্কেট এলাকার শপিং কমপ্লেক্সের লেডিস টেইলর্সরা জানান, মেয়েদের থ্রি-পিস, বোরকা আর কুর্তি বানানোর অর্ডার বেশি এসেছে। ক্রেতাদের সঠিক সময়ে পোশাক ডেলিভারি দিতে হবে, তাই রাত দিন সেলাইয়ের কাজ করতে হচ্ছে।
হাজী মহসিন রোডের রজনীগন্ধা লেডিস টেইলার্সের মালিক কামরান হোসেন বলেন, থ্রি-পিস এবং ব্লাউজ তৈরির অর্ডার বেশি। গত সপ্তাহের নেওয়া অর্ডার এ সপ্তাহে ডেলিভারি দিচ্ছি। নতুন করে অর্ডার নিলেও ডেলিভারি দিতে দেরি হবে বলে ক্রেতাদের আগে থেকেই জানিয়ে দিচ্ছি। সকাল থেকে বিকেল এবং সন্ধ্যার পর থেকে রাত প্রায় দুইটা পর্যন্ত সেলাইয়ের কাজ করছেন কারিগররা।
Advertisement
নতুন পোশাক তৈরি করতে আসা ফরহাদ হোসেনসহ কয়েকজন ক্রেতা জানান, আর কিছুদিন পর আমাদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। নতুন পোশাকের অর্ডার দিতে বাজারে এসেছি। তবে দর্জির দোকানে প্রচুর ভিড়। এবার কাপড়ের দাম এবং মজুরিও একটু বেশি।
নিউ মার্কেটে লেডিস টেইলার্সের দোকানে আসা নার্গিস আক্তার বলেন, তিনটা থ্রি-পিসের কাপড় নিয়ে এসেছি। কিন্তু দোকানে অনেক চাপ থাকায় দুইটার অর্ডার নিয়েছেন দর্জি। অন্য আরেকটি ঈদের পর বানাবো ভাবছি। তবে মজুরি একটু বেশি দিতে হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এফএ/এমএস