জাতীয়

ভ্যাট আদায়ের আওতা বাড়াতে কাজ করছে এনবিআর: চেয়ারম্যান

ভ্যাট আদায়ের আওতা বাড়াতে কাজ করছে এনবিআর: চেয়ারম্যান

ভ্যাট আদায়ের আওতা বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান।

Advertisement

শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ শীর্ষক কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি। ইআরএফ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান র্যাপিডে যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।

অতীতে ট্যাক্স আদায়ে পলিসি লেভেলে জোর দেওয়া হলেও বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমকে অটোমেশন করতে উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এটি বাস্তবায়ন হলে ট্যাক্স নিয়ে ভীতি কমবে। ভবিষ্যতে আর অফলাইনে রিটার্ন নেওয়া হবে না। যারা ট্যাক্স ফাঁকি দেন, তাদের তদারকির আওতায় আনা হবে এবং যারা ট্যাক্স দেন তারা হয়রানির শিকার হবেন না।

তিনি বলেন, রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস হবে ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট। আগামী বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যাবে। বড় বাজেট তৈরি করার প্রবণতা কমাতে হবে। আইন তৈরি হয়, তবে বাস্তবায়ন করা হয় না।

Advertisement

কালো টাকার সুযোগ বন্ধে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, কর সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বিভিন্ন খাতের সরকারি সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন পুরোপুরি অনলাইন রিটার্নে যেতেই হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান দুর্নীতি বন্ধ করুন, যা চান পাবেন: এনবিআর কর্মকর্তাদের ব্যবসায়ীরা এনবিআর দুই ভাগ হচ্ছে, ঈদের আগেই অধ্যাদেশ

আব্দুর রহমান খান বলেন, ইএফডি যন্ত্র দোকানে আছে, কিন্তু তা ব্যবহার করা হয় না। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দেন না। ভ্যাট দেন ভোক্তারা। অনেক ক্ষেত্রে দোকানদারেরা ভোক্তার কাছ থেকে ভ্যাট নিয়ে জমা দেন না। ফলে ভ্যাট থেকে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। কর প্রশাসনের দুর্বলতা আছে। গত বছর ১ কোটি ১৪ লাখ টিআইএনধারীর রিটার্ন জমা পড়েছে ৪৫ লাখ। এবার ১৫ লাখ অনলাইন রিটার্ন জমা পড়েছে। এদের মধ্যে ১০ লাখই শূন্য রিটার্ন জমা পড়েছে।

তিনি বলেন, দুই তৃতীয়াংশ নামমাত্র রিটার্ন জমা দেন। যারা রিটার্ন দেন না, তাদের তেমন সমস্যা হয় না। করের আওতা বাড়াতে গ্রাম, মফস্বল এলাকায় ভ্যাট ট্যাক্স আদায় বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।

মূল প্রবন্ধে র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক এম আবু ইউসুফ বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রাজস্ব ঘাটতি প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। ফলে সংকুচিত হচ্ছে অর্থনীতি। রাজস্ব আদায়ের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে না পারলে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোসহ উন্নয়ন খাতের নানান ইস্যুতে চাপ বাড়ে। বাজেট কমাতে হয়।

Advertisement

তিনি বলেন, সেবা পেলে মানুষ কর দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এই সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বিভিন্নখাতের সরকারি সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীল। এটা পরিবর্তন করে প্রত্যক্ষ কর অন্তত ৬৫ শতাংশ করা উচিত। কর প্রদানের পদ্ধতিগত জটিলতা দূর করতে হবে। বাজেটে ঘাটতি কমাতে হবে।

কর্মশালায় আরও উঠে আসে, ঠিকঠাক সরকারি সেবা নিশ্চিত করা যেন মানুষ কর প্রদানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। পদ্ধতিগত জটিলতা নিরসন আর পুরো অটোমেশন চালুতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়।

ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালার সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন মাসুম।

এসএম/ইএ/জেআইএম