নির্বিঘ্নে প্লেনে যাত্রা করতে নিজের নয় বছরের পোষা কুকুরকে ডুবিয়ে মেরেছেন এক মার্কিন নারী। কুকুরটি নিয়ে যাত্রায় বিপত্তি দেখা দেওয়ায় এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওরল্যান্ডো শহরে এমন এক ঘৃণ্য অপরাধে শাস্তিও পেয়েছেন ওই নারী।
Advertisement
স্থানীয় সময় বুধবার (১৯ মার্চ) গুরুতর প্রাণী নির্যাতনের জন্য গ্রেফতার করা হয় ওই নারীকে। পরবর্তীতে তিনি প্রায় ৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা (৫ হাজার ডলার) জরিমানা দিয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
একটি নিষ্পাপ প্রাণীকে এভাবে মেরে ফেলার দায়ে তার পক্ষে আদালতের নথিতে কোনো আইনজীবীকেও লড়তে দেখা যায়নি। পুলিশ জানায়, ওই নারী ইচ্ছাকৃতভাবেই একটি অবুঝ প্রাণীকে মেরে ফেলেছেন বলে তাদের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ডিসেম্বরে ওরল্যন্ডো আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের বাথরুমে ময়লার ঝুড়িতে ৯ বছর বয়সী স্নাউজার প্রজাতির একটি কুকুরের মরদেহ পান বিমানবন্দরের একজন কর্মচারী।
Advertisement
একই সঙ্গে কুকুরটির মালিকের তথ্য সংবলিত একটি পরিচয় ট্যাগও পেয়েছিলেন বলে জানান তারা। এরপর অনুসন্ধান চালিয়ে এ বিষয়ে তথ্য পায় শহরের পুলিশ সদস্যরা।
কুকুরটির শরীরে স্থাপন করা মাইক্রোচিপের মাধ্যমে এর পরিচয় নিশ্চিত করেছে বলে জানান তারা। পরে ময়না তদন্তের রিপোর্টে টারউইন নামের কুকুরটি ডুবিয়ে মারার তথ্য উঠে আসে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছর বিমানে ভ্রমণের সময়ে তার কাগজপত্রে কিছু জটিলতার কারণে ৯ বছর বয়সী পোষা কুকুর ‘টারউইনকে’ নিয়ে তার যাত্রায় বাধা সৃষ্টি হয়।
বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, কুকুরটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় তাকে বিমানে নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। মূলত, মার্কিন কৃষি বিভাগের বিধি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কলম্বিয়ায় নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই কুকুরের একজন পশু চিকিৎসকের অনুমোদিত স্বাস্থ্য সনদ ও রেবিস টিকার সনদ থাকতে হয়। এসব কাগজপত্র না থাকার কারণেই কুকুরটি নিয়ে ভ্রমণে ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিল।
Advertisement
এরপরই এই নারী ওই জঘন্য অপরাধ করেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ। বিমান বন্দরের সিসি ক্যামেরায় এই ঘটনাটি ধরা পড়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, লাতাম এয়ারলাইন্সের একজন এজেন্টের সঙ্গে ১৫ মিনিট ধরে কথা বলছেন ওই নারী। ওই সময় টারউইন তার সঙ্গেই ছিল। এরপর কুকুরটিকে নিয়ে তিনি টিকিটিং অঞ্চলের কাছে একটি বাথরুমে প্রবেশ করেন। তবে ২০ মিনিটেরও কম সময় পরে টাইউইন ছাড়াই বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসেন।
এ সময় এক কর্মচারী বাথরুমে ওই নারীকে তড়িঘড়ি করে পানি ও কুকুরের খাবার পরিষ্কার করতে দেখেছেন বলেও মামলার এজাহারে বলা হয়েছে। ওই কর্মচারীই মিনিট কুড়ি পর বাথরুমের ময়লার ঝুড়িতে টারউইনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছিলেন।
ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন (সিবিপি) গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, কলম্বিয়ার বোগোতার উদ্দেশে একটি ফ্লাইটে উঠেছিলেন ওই নারী, পরে ইকুয়েডরে যাত্রা করেন তিনি।
সূত্র: এপি, ইউএনবি
এমএসএম