বছর পাঁচেক আগেও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় তৈরি লুঙ্গি ও শাড়ির চাহিদা সারাদেশে ছিল। কিন্তু দফায় দফায় সুতাসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে ভারতীয় শাড়ির সহজলভ্যতার কারণে এক সময়ের প্রাণচাঞ্চল্যময় তাঁতপল্লিতে এবার ঈদের আগেও নেই ব্যস্ততা। কারিগররা ঈদ মৌসুমেও অলস সময় পার করছেন।
Advertisement
উপজেলার সাভার, চাচিতারা, জালশুকা ও নতুন ভোয়া এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ব্রিটিশ আমলে গড়ে ওঠা শতবর্ষ পুরোনো ঐতিহ্যবাহী এ তাঁতপল্লি ঈদ এলেই তাঁতের খটখট শব্দ, আর ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠত। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। এতে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
কিছুদিন আগেও দক্ষ কারিগরের নিখুঁত হাতে বুননের জন্য এখানকার তাঁতের তৈরি লুঙ্গি ও শাড়ির ব্যাপক কদর ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির পর দফায় দফায় সুতার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট ও দেশীয় বাজারে ভারতীয় শাড়ির সহজলভ্যতায় তাঁতপল্লির অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। লোকসান গুনে গুনে দিশেহারা হয়ে এরইমধ্যে অনেকে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন অনেক কারিগর।
আরও পড়ুন-
Advertisement
সিরাজগঞ্জ থেকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ সাভার তাঁতপল্লিতে কাজ করতে এসেছেন জহিরুল। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কিছু কিছু কাজ পাই। বেশি সময় বসেই থাকি। হাটে কেনা-বেচার পরিস্থিতি খুব খারাপ। সিরাজগঞ্জ থেকে এখানে এসেছি। ওইখানে অনেক তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। মানিকগঞ্জে কাজ করতে এসেছি, এখানে মেসে খাই। মেসের টাকাও দিতে পারি না। পরিবার চলবে কীভাবে? অন্য পেশা বেছে নেওয়া ছাড়া উপায় নাই। ঈদের পর চাকরি খোঁজার জন্য ঢাকায় যাবো। ঈদের সপ্তাহ খানেক আছে, কাজ করে বিদায় দিয়ে দিবো।
সুলাইমান জাগো নিউজকে বলেন, করোনার পর থেকেই আমাদের তাঁত ব্যবসা নেই বললেই চলে। সারা বছরে দুই মাস ভালো গেলো, ওই ব্যবসা আমাদের জন্য ভালো না। আমরা দিনমজুর, কাজ করবো হাটে গিয়ে বাজার করে খাবো।
ছালাম শেখ জাগো নিউজকে বলেন, রোজার আগেও আমাদের কাজ ছিল। রাত ১২টা-১টা পর্যন্ত কাজ করতাম। এখন কাজ নাই। কোনো রকম সময় কাটানোর জন্য রাখা হয়। এখন কাজের বাজার খুব খারাপ।
আরও পড়ুন-
Advertisement
মল্লিক ব্রাদার্স অ্যান্ড সন্সের প্রোভাইডার মো. আরিফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এখন মানুষ শাড়ি পরতেই চায় না। এজন্য এখন তাঁতের ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
এফএ/এমএস