দেশজুড়ে

রামুতে ২০ দিনে সাগরে ছাড়া হলো দেড় হাজার কাছিম ছানা

রামুতে ২০ দিনে সাগরে ছাড়া হলো দেড় হাজার কাছিম ছানা

কক্সবাজারের রামুর প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতের বেলাভূমি দিয়ে ২০ দিনে দেড় হাজার কাছিমের ছানা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে একদিনে ছাড়া হয় ১২০টি ছানা।

Advertisement

অলিভ রিডলি প্রজাতির ছানাগুলো নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) কর্তৃক পরিচালিত প্রজনন হ্যাচারিতে জন্ম নিয়েছে। সৈকতের প্যাঁচার দ্বীপ পয়েন্টে বনবিভাগ ও নেকমে কর্মকর্তারা সাগরের ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত এসব কাছিমের ছানাগুলো অবমুক্ত করেছেন।

নেকমের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ুম জানান, কক্সবাজার উপকূলের ১২টি স্থান থেকে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল। এসব ডিম সোনাদিয়া দ্বীপ, সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, রামুর প্যাঁচার দ্বীপ, হিমছড়ি এলাকার হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। বিশেষ কায়দায় রাখা ডিম থেকে ৬০ থেকে ৯০ দিনে বাচ্চা ফুটে। পরে এসব বাচ্চা নিরাপদে সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়। এ উদ্যোগ কাছিম প্রজনন ও পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শুক্রবার বিকেলে কাছিম ছানা অবমুক্ত করতে উপস্থিত হওয়া কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক বলেন, বন রক্ষার পাশাপাশি পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণে কাজ করছে বনবিভাগ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কাছিম। সাগরের ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত কাছিমের সংখ্যা বাড়াতে ছানা প্রজনন অব্যাহত রাখার চেষ্টা চলে। এটা ইতিবাচক পদক্ষেপ।

Advertisement

প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব কক্সবাজারের উপদেষ্টা আ ন ম হেলাল উদ্দিন বলেন, কাছিম সাগরের পরিবেশের রক্ষাকবজ। এরা সাগরের ময়লা পরিষ্কার করে। এসব কাছিমের ছানা অবমুক্ত করার মাধ্যমে সমুদ্রের প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে সাহায্য করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় এ ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

নেকমের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি ডিম পাওয়া গেছে। আগামী মাস পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করা যাবে। সমুদ্র উপকূলে মানুষের চলাচল সংরক্ষিত ও রাতে আলোর ব্যবহার না থাকলে সাগরের কাছিমগুলো ডিম পাড়তে উপকূলে আসে।

পরিবেশবিদ আহমদ গিয়াস বলেন, বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, কাছিমের মতো কিছু প্রাণীর প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য নিয়ম-নীতি রয়েছে। এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে অবমুক্তি প্রক্রিয়া পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিকভাবে সম্পাদিত হয় এবং সংরক্ষিত প্রজাতির জন্য ক্ষতিকর কিছু না ঘটে। কাছিমের ছানা অবমুক্ত করার মাধ্যমে তাদের প্রজনন হার বৃদ্ধি পায় এবং পরিবেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হয়।

সায়ীদ আলমগীর/এমএন/এমএস

Advertisement