খেলাধুলা

প্রবাসী ফুটবলার ইস্যুতে বাংলাদেশের পথেই হাঁটছে ভারত

প্রবাসী ফুটবলার ইস্যুতে বাংলাদেশের পথেই হাঁটছে ভারত

প্রবাসী ফুটবলার হামজা চৌধুরীকে দলে ফিরিয়ে ব্যাপক আলোচনায় এখন বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গন। ইংলিশ লিগের ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডের এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারকে দলে নিয়েই ভারতের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে গেছে বাংলাদেশ। মূলত, ফুটবল দলকে শক্তিশালী করতেই হামজাকে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

Advertisement

বাংলাদেশ ফুটবলে আলোচনায় থাকা আরেক প্রবাসী ফুটবলার ফাহামিদুল হক। যদিও ১৮ বছর বয়সী এ তারকাকে ভারত ম্যাচের জন্য দলের সঙ্গে নেওয়া হয়নি।

এবার বাংলাদেশের পথেই হাঁটার কথা ভাবছে ভারতও। দক্ষ স্ট্রাইকার সংকটের কারণে প্রবাসী ফুটবলারদের ফেরাতে উদ্যোগী হচ্ছে তারা।

অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) সভাপতি কল্যাণ চৌবে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ভারতীয় দলে সঙ্গে ওভারসিজ সিটিজেনস অব ইন্ডিয়া (ওসিআই) খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তির জন্য নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে।

Advertisement

তিনি স্বীকার করেন, ভালো মানের একজন স্ট্রাইকার খুঁজে পেতে এখনো লড়াই করতে হচ্ছে ভারতকে। ভারতীয় ফুটবলের সম্ভাব্য "গেম-চেঞ্জার" খুঁজে পেতে প্রবাসীদের দ্বারস্থ হচ্ছেন তারা।

ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো একজন নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকারের অভাব। তারা এখনো ৪০ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড সুনীল ছেত্রির ওপর নির্ভরশীল।

গতকল বুধবার অবসর ভেঙে মাঠে ফিরে মালদ্বীপের বিপক্ষে ভারতের ৩-০ গোলের জয়ে এক গোল করেন ছেত্রি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শিলংয়ে এ ম্যাচ খেলে ভারত। এটি ছিল ৪৮৯ দিন পর ভারতের প্রথম জয়।

দিল্লিতে খেলো ইন্ডিয়া প্যারা গেমস ২০২৫-এর সাইডলাইনে পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন চৌবে বলেন, ‘আমরা এমন একটি নীতিমালা তৈরির চেষ্টা করছি, যা আমাদের বিদেশে থাকা ভারতীয় বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের প্রতিভা কাজে লাগাতে সাহায্য করবে। অনেক দেশ ইতিমধ্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে। যতদিন না আমরা পরিষ্কার নীতিমালা তৈরি করছি, ততদিন জাতীয় দলের নির্বাচন বিদ্যমান নিয়ম অনুসারেই চলবে। তবে আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে যে, এই খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় ফুটবলের জন্য একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

Advertisement

ছেত্রির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে চৌবে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সুনীল ছেত্রির মতো একজন খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করছি। প্রশ্ন হচ্ছে—তার জায়গা কে নেবে? আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার, যাতে আমরা ভারতীয় স্ট্রাইকারদের, বিশেষ করে ৯ ও ১০ নম্বর পজিশনে খেলার জন্য, তৈরি করতে পারি।’

বর্তমানে বেশিরভাগ ক্লাব এই পজিশনগুলোতে বিদেশি স্ট্রাইকারদের অগ্রাধিকার দেয়, যা ভারতীয় ফরোয়ার্ডদের উন্নতির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো, খেলোয়াড়দের জন্য আরও ভালো সুযোগ তৈরি করা’- তিনি যোগ করেন।

ছেত্রির দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনেরও প্রশংসা করে চৌবে বলেন, ‘সুনীল ছেত্রি লক্ষ লক্ষ মানুষের অনুপ্রেরণা এবং মাঠে ও মাঠের বাইরে সত্যিকারের নেতা। ভারতীয় ফুটবলে তার নিবেদন ও প্রতিশ্রুতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছে। আমরা তার অর্জন নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত।’

ফিফার নিয়ম অনুযায়ী একজন খেলোয়াড়কে যে দেশের হয়ে খেলতে হবে, সেই দেশের স্থায়ী আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট ধারণ করতে হবে। যেখানে তার নাম, জন্মতারিখ, জন্মস্থান এবং জাতীয়তার স্পষ্ট বিবরণ থাকতে হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো দ্বৈত নাগরিকত্বকে স্বীকৃতি দেয়, যা খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় তাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেয়।

তবে ভারত দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃতি দেয় না। এর ফলে কোনো খেলোয়াড়কে জাতীয় দলে খেলার যোগ্য হতে হলে তার বর্তমান নাগরিকত্ব ত্যাগ করে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে হবে।

এমএইচ/