দেশজুড়ে

বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত সাবেক ছাত্রদল নেতা কবির হোসেন (২৮) মারা গেছেন।

Advertisement

বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়। কবির হোসেন ওই থানার সাদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং চাঁদপুর গ্রামের ফজল আকন্দের ছেলে।

এদিকে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকর্মীরা কেজির মোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় তারা হত্যার দায়ে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিএনপির নেতারা বলেন, এনায়েতপুর থানা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মুনজুর রহমান মুঞ্জু সিকদার, যুবদলের আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন জহুরুল, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম মিঠু মীর ও সাধারণ সম্পাদক কালাম সিকদারের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতা কবিরকে হত্যা করা হয়েছে।

Advertisement

এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন ইয়াজদানি জাগো নিউজকে বলেন, ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হন। এদের মধ্যে কবির হোসেন নামের একজন মারা গেছেন। তার পরিবার মামলা করবে বলে জানিয়েছে।

অপরদিকে এ ঘটনায় দুই বিএনপি নেতার প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ স্থগিত করেছে জেলা বিএনপি। একইসঙ্গে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে তারা।

বুধবার রাতে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশের সই করা একটি পত্রে এই তথ্য জানানো হয়।

পদ স্থগিত হওয়া নেতারা হলেন- এনায়েতপুর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির জনি সাইদুল ও সাবেক সদস্য সচিব মঞ্জুর রহমান মঞ্জু শিকদার।

Advertisement

ওই চিঠিতে বলা হয়- এনায়েতপুরে বালুমহাল ও ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা কবির হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ স্থগিত করা হলো।

একই চিঠিতে এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন চৌধুরী, নাজমুল হোসেন তালুকদার রানা ও যুগ্ম সম্পাদক নূর কায়েম সবুজ।

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই তদন্ত কমিটিকে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদক বরাবর ঘটনার বিস্তারিত বিবরণসহ দোষীদের শাস্তির সুপারিশ লিখিত প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে বলা হয়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন বলে চিঠিতে বলা হয়।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের করোনা বাজারে ইফতারের আয়োজন করেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য রওশন আলী। অপরদিকে চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি করিম মোল্লা। কিন্তু রওশন আলী ও তার লোকজন চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে করিম মোল্লার ইফতার আয়োজনে বাধা দেন। পরবর্তীতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। এ ঘটনায় কবির হোসেনসহ সাতজন আহত হয়।

প্রথমে গুরুতর অবস্থায় কবির হোসেনকে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে বাংলাদেশ ক্রিটিক্যাল কেয়ার এন্ড জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এম এ মালেক/এফএ/এএসএম