নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের সংস্কার কাজ না করেই প্রায় ছয় লাখ টাকা তুলে নেওয়ার সংবাদের ভিত্তিতে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী ও উপজেলা প্রকৌশলী কাজী কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে শুনানির আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জেলা প্রশাসনের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আশ্রাফ হাবিব বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) তাসলিমুন নেছা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ বিষয়ে শুনানি করবেন।
শুনানিতে জাগো নিউজের নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ইকবাল হোসেন মজনুকেও উপস্থিত থাকতে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।
Advertisement
এরআগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ‘কাজ না করেই প্রকল্পের টাকা তুলে নিলেন ইউএনও-প্রকৌশলী’ শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় জাগো নিউজে।
এতে বলা হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার রাজস্ব তহবিল থেকে পুরাতন ভবন সংস্কার প্রকল্পে পাঁচ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এজন্য ঠিকাদার মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজকে ২০২৪ সালের ৮ জুলাই কার্যাদেশও প্রদান করা হয়। এছাড়া কাজ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে ওই বছরের ২০ আগস্ট চেকের মাধ্যমে বরাদ্দের টাকা তুলে নেওয়া হয়। অথচ ভবনটির কোনো কাজই করা হয়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের নতুন ভবন করার পর পুরাতন ভবনটি অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে উন্নয়নমূলক কাজের কোনো চিহ্নও পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স পুরাতন ভবনের মেরামত প্রকল্পে স্থানীয় ঠিকাদার মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে পাঁচ লাখ ৯৫ হাজার টাকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজস্ব তহবিলের ওই প্রকল্পে ২০২৪ সালের ৮ জুলাই দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ওই বছরের ২০ আগস্ট কার্য সম্পাদন করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের তদারকিতে এ প্রকল্পের টাকা উত্তোলনে চেকে সই করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী।
Advertisement
অন্যদিকে মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজের মালিক মিলন হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ কাজের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তৎকালীন উপজেলা প্রকৌশলী কাজী কামরুল ইসলামের মাধ্যমে ইউএনও আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী আমাকে ডেকে নিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানের একটি খালি চেক দিতে বলেন। আমি সই করে সেটি ইউএনওকে দিয়ে এসেছি। পরে মেসেজে জানলাম আমার ব্যাংক হিসাবে টাকা দিয়ে তা ওই চেকের মাধ্যমে তা তুলে নেওয়া হয়েছে।’
সাবেক ইউএনও আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী বর্তমানে বাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবং প্রকৌশলী কাজী কামরুল ইসলাম বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
শুনানিতে প্রকৌশলী কাজী কামরুল ইসলামসহ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্তমান ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম এবং প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর কবিরকেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এমএস