নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বাস রাখাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে সমঝোতা বৈঠকে বিএনপি ও সেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত সাতজনের আহতের খবর পাওয়া গেছে।
Advertisement
শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেল থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তিন দফায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৌচাকের চিশতিয়া বেকারি এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।
আহতরা হলেন, পাপ্পু, ফিরোজ, হাসান মাহমুদ সজীব, বিল্লাল হোসেন, আবু সিদ্দিক, ইসমাইল ও হাসেম মিয়া। এরমধ্যে পাপ্পু সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব ও হাসেম মিয়া নীলাচল পরিবহনের ফোরম্যান। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর নীলাচল পরিবহনের প্রায় ৩৫টি বাস মৌচাকের চিশতিয়া বেকারি সংলগ্ন একটি খালি মাঠে ভাড়ায় রাখা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে ওই পরিবহনের একটি বাস রাখার সময় এলাকার একটি মসজিদের কার্নিশের দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ওই এলাকার বাসিন্দা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মমিনুর রহমান বাবু ও এলাকাবাসী নীলাচল বাসের কর্তৃপক্ষকে ওই স্থান হতে বাস ডিপো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
Advertisement
একপর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে বাস কর্তৃপক্ষ ও সেচ্ছাসেবক দল নেতাদের মধ্যে এক মাসের ভেতর ডিপোটি সরিয়ে নেওয়া হবে মর্মে সমঝোতা হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের মাধ্যমে নীলাচল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে পুনরায় বসে সমাধানের আশ্বাস দেন। শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে উভয় গ্রুপ আবারও বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে বসেন। সেখানে ওয়ার্ড বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ভাষ্য, উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সহযোগী মোক্তার হোসেন ও পলাশের নেতৃত্বে তাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা হয়েছে।
অপরদিকে বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেনের দাবি, তার কোনো কর্মী সমর্থক ঘটনাস্থলে যাননি। নীলাচল পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও সেচ্ছাসেবক দল নেতাকর্মীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে।
এ বিষয়ে নীলাচল পরিবহন কর্তৃপক্ষের ফোরম্যানের দায়িত্বে থাকা হাসেম মিয়া জানান, ৫০ হাজার টাকা ভাড়ায় এক মালিকানা জমিতে বাস রেখে আসছেন তারা৷ বৃহস্পতিবার একটি মসজিদের সঙ্গে বাসের ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে শনিবার বসা হয়েছিল। সমঝোতার জন্য বসার পর সেচ্ছাসেবক দল নেতা বাবু ও তার লোকজন হাসেমসহ তার সঙ্গে থাকা আরও তিনজনকে বেধড়ক মারধর করেন। তার থেকে ওই এলাকার কিছু লোকজন অর্থের আশায় কিছুদিন বিরক্ত করছিল বলে জানান হাসেম।
Advertisement
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মমিনুর রহমান বাবুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনার আমি কিছুই জানি না। আমার লোকজন কেউ যায়নি। আমি কয়েকদিন অসুস্থ। তবে শুনেছি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা নীলাচল বাসের কর্তৃপক্ষের কাছে মসজিদের ক্ষতিপূরণের নিয়ে আজ বসেছিল। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে।
তার সহযোগী মোক্তার ও পলাশের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি পলাশ ও মোক্তার যায়নি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম জাগো নিউজকে বলেন, নীলাচল বাসের ধাক্কায় একটি মসজিদের কার্নিশ ভেঙে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কিন্তু দুই গ্রুপের কাউকে আমরা চিহ্নিত করতে পারিনি। এখন পর্যন্ত এক পক্ষ অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো. আকাশ/এমএন/এমএস