দেশজুড়ে

৪ বছরেই বৃদ্ধ হয়ে গেছে বায়েজিদ

মায়ের কোলজুড়ে আসছে প্রথম সন্তান। আনন্দের জোয়ারে ভাসছে গোটা পরিবার। কিন্তু সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর এ আনন্দ রূপ নিলো বিষাদে। কেননা শিশুটির শারীরিক গঠন স্বাভাবিক শিশুদের মতো নয়। প্রথম দর্শনেই মনে হবে শিশুটি ৮০ বছরের বৃদ্ধ।মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার খালিয়া গ্রামে তৃপ্তি খাতুন ও লাভলু শিকদারের ঘরে চার বছর আগে জন্মগ্রহণ করে শিশু বায়েজিদ। মায়ের পেট থেকেই ভিন্নধর্মী রোগে ভুগছে বায়েজিদ।বায়েজিদের বাবা লাবলু শিকদার জাগো নিউজকে জানান, অনেক ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। রোগের কারণ অনুসন্ধান করতে পারেন নি স্থানীয় চিকিৎসকরা। লাবলু শিকদার পেশায় কৃষক হওয়ায় তার আদরের ধনকে বড় কোনো হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করাতে পারেন নি। তিনি শিশুটির চিকিৎসার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।শিশুটির মা তৃপ্তি খাতুন বলেন, স্বাভাবিকভাবে শিশুরা ১০ মাসে হাটা শিখলেও বায়েজিদ সাড়ে তিন বছরে হাটতে শিখেছে। আবার তিন মাস বয়সে তার সবগুলো দাঁত উঠে গেছে। এছাড়া সে স্বাভাবিক চলাফেরা ও খাওয়া দাওয়া করতে পারে। শৈশবে সন্তানের এমন চেহারা দেখে ভয়ে কেউ কাছে আসতে চাইতো না। বর্তমানে পরম আদর-যত্নে তার (মায়ের) কোলে বড় হচ্ছে শিশু বায়েজিদ।বায়েজিদের দাদা হাসেম আলী শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, শিশুটি বৃদ্ধ চেহারা নিয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে। এ নিয়ে নানা গুজব ছড়াতো গ্রামের লোকজন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার চেহারায় বৃদ্ধ মানুষের ছাপ প্রকট হতে থাকে। দিন যত যাচ্ছে তার এ সমস্যা বাড়ছে। আশি বছরের পৌঢ়ের মতো মুখ, পেটসহ শরীরের চামড়া স্থুল হয়ে ঝুলে আছে। দেখলে মনে হবে অবিকল একজন বৃদ্ধ মানুষ বসে আছে। চেহারায় কোনো শিশুর ছাপ নেই। বায়েজিদের বর্তমান বয়স ৪ বছর হলেও তাকে দেখতে ৭০/৮০ বছরের পৌঢ় মনে হয়।বায়েজিদের বন্ধুরা জানায়, সে লেখাধুলা করতে পারে না। বেশির ভাগ সময়ই বাড়িতে থাকে। মাঝে মধ্যে মাঠে আসলেও শুধু দাঁড়িয়ে থেকে খেলা দেখে।এ বিষয়ে মাগুরা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জয়ন্ত কুমার জাগো নিউজকে জানান, নানা ধরনের জেনেটিক সমস্যায় এমন হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে প্রোজিরিয়া বলে। এ রোগের চিকিৎসা থাকলেও জটিল। সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, সঠিক সময়ের মধ্যে চিকিৎসা না দেয়া গেলে শিশুর বয়স পাঁচ বছর পূর্ণ হবার পর থেকে হার্ট এ্যাটাকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে। এছাড়া এটি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য একটা বড় অভিজ্ঞতা বলেও মনে করেন এ চিকিৎসক।এমএএস/আরআইপি

Advertisement