জন্ম ও বেড়ে ওঠা আলাদা দুই শহরে। যে কারণে অনেকেই মেলাতে পারবেন না। কিংবা মেলানোর কথাও না। কিন্তু বাস্তবতা হলো- মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শাহরিয়ার নাফীস ছেলেবেলার বন্ধু। ভাবছেন, তা কী করে হয়?
Advertisement
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জন্ম ময়মনসিংহ শহরে। সেখানেই বেড়ে ওঠা। আর শাহরিয়ার নাফীস ঢাকার ছেলে। এখন ভক্তদের মনে প্রশ্ন, তাহলে ছেলেবেলা থেকে বন্ধু হওয়ার তো সুযোগই থাকার কথা নয়। তবুও সেটি কী করে হলো?
শাহরিয়ার নাফীসের মুখ থেকেই শোনা যাক সে বন্ধুত্বের গল্প। বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে রিয়াদ আমার খুব ভালো বন্ধু। অনেক দিনের বন্ধুত্ব আমাদের।’
অনেক দিন মানে কত দিন? শাহরিয়ার নাফীসের জবাব, ‘ঠিক ২৫ বছরের। আজ থেকে ২৫ বছর আগে আমাদের পরিচয়। সেটাও ক্রিকেটের সূত্র ধরেই। ক্রিকেটই আমাদের দুই শহরের দুই কিশোরকে বন্ধুতে পরিণত করেছে।’
Advertisement
বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘২০০০ সালে মালয়েশিয়ায় এশীয় অনূর্ধ্ব-১৫ এর একটা টুর্নামেন্ট হয়েছিল। সেজন্য বিসিবি একটা ওপেন ট্রায়াল ডেকেছিল। সেই ট্রায়ালে আমি অংশ নিয়েছিলাম ঢাকা থেকে। রিয়াদ এসেছিল ময়মনসিংহ শহর থেকে। সেখান থেকেই আমাদের পরিচয়। তারপর আমরা খুব ভালো বন্ধু। জানেন, ওই ট্রায়ালের পর মাহমুদউল্লাহ ৬ ম্যাচের শেষ তিনটিতে টানা ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিল।’
জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলার কারণে বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়েছে বলে তিনি বলেন, ‘এরপর দীর্ঘ সময় সে জাতীয় দলে খেলেছে। আমরা জাতীয় দলেও এক সাথে খেলেছি অনেক দিন। এখন আমি বোর্ডে দায়িত্ব পালন (বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির ম্যানেজার) করছি। আর রিয়াদ সবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছে। তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারকে সফল মনে করছি। আমার ধারণা, সে জাতীয় দলকে অনেক সার্ভিস দিয়েছে। তার অবদান প্রশংসা করার মতো। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, সেভাবে প্রশংসা করিনি রিয়াদকে।’
বন্ধু রিয়াদকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে কণ্ঠে খানিক আক্ষেপ নিয়ে শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘আমার মনে হয় রিয়াদ দেশের হয়ে অনেক ভালো পারফর্ম করেছে। জাতীয় দলে তার অবদান যথেষ্ঠ। আমরা সব সময় তাকে সেভাবে হাইলাইট করতে পারিনি। সেটা আমাদের ব্যর্থতা, রিয়াদের নয়।’
‘রিয়াদ যে পরিস্থিতিতে ভালো খেলেছে, সেটাকে আরও বেশি হাইলাইট করা উচিত ছিল। আমরা সেভাবে প্রশংসা করিনি। ও (মাহমুদউল্লাহ) সব সময় কঠিন পরিস্থিতিতে খেলেছে। আমার মনে হয়, সে যে পরিমান দেশের জন্য পারফর্ম করেছে, সেই পরিমান প্রশংসা পায়নি। আরও মূল্যায়ন প্রাপ্য ছিল।’
Advertisement
শাহরিয়র নাফীস আরও বলেন, ‘দুই নম্বর বিষয় হলো- সে সবসময় নিজের কথা না ভেবে টিমের জন্য খেলেছে। মাথা নীচু করে দলকে সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সে একজন মহান নেতা। লড়াকু ক্রিকেটারও বটে। পুরো সময় পরিশ্রম ও পারফর্ম করে দলে থেকে গেছে। আমার মনে হয়, রিয়াদের কাছ থেকে অনেক কিছু আহরণের আছে ছোটদের।’
এআরবি/এমএইচ/জেআইএম