রোজা রাখার জন্য পবিত্রতা অপরিহার্য নয়। তাই রমজানের রাতে যৌনমিলন বা স্বপ্নদোষের কারণে কারো ওপর যদি গোসল ফরজ হয় এবং সে সুবহে সাদিকের আগে গোসল করতে না পারে, তাহলেও রোজার নিয়ত করলে গোসল ফরজ অবস্থায়ই তার রোজা শুরু হবে। গোসল ফরজ অবস্থায় রোজা শুরু করার কারণে তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে অবশ্যই ফজরের নামাজের জন্য যথাসময়ে গোসল করে ফজরের নামাজ আদায় করা তার ওপর ফরজ।
Advertisement
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, এক সাহাবি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ফজরের নামাজের সময় শুরু হয়ে যাওয়ার পরও আমি যদি অপবিত্র থাকি, তবে কি আমি রোজা রাখতে পারব? এ প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, আমিও অনেক সময় ফজরের সময় শুরু হওয়ার পরও অপবিত্র থাকি এবং আমি রোজাও রাখি। সাহাবি বললেন, আপনি তো আমাদের মতো নন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ আপনাকে আপনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে আপনাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং তাঁকে কীভাবে ভয় করতে হয় সে বিষয়ে আপনাদের চেয়ে বেশি জ্ঞান রাখি। (মুসনাদে আহমদ)
হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) বলেন, রমজান মাসে অনেক সময় সহবাসের কারণে গোসল ফরজ অবস্থায় আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ভোর হতো, এরপরও তিনি রোজা রাখতেন। (সহিহ মুসলিম)
রোজার নিয়ত কি রাতেই করতে হবে?
Advertisement
রমজানের ফরজ রোজার নিয়ত রাতে করা উত্তম। উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোজা রাখার নিয়ত করবে না তার রোজা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না। (সুনানে আবু দাউদ)
তবে যদি কেউ রাতে রোজার নিয়ত না করতে পারে, তাহলে দিনে সূর্য ঢলার প্রায় এক ঘণ্টা আগে নিয়ত করলেও রোজা হয়ে যাবে। শর্ত হলো, সুবহে সাদিকের পর থেকে নিয়তের পূর্ব পর্যন্ত রোজার পরিপন্থী কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সুবহে সাদিকের পর রোজার পরিপন্থী কোনো কাজ করলে অর্থাৎ কিছু খেলে, পান করলে বা রোজা ভেঙে যায় এমন কিছু করলে আর রোজার নিয়ত করার সুযোগ থাকবে না।
ওএফএফ/এএসএম
Advertisement