জাগো জবস

নিজেকে বুঝতে পারাই সফলতার মাপকাঠি : মাহাদী হাসান

মাহাদী হাসান প্রফেশনাললি মিডিয়া ও নাট্যব্যক্তিত্ব। তার পড়াশোনায় ব্যাপক আগ্রহ। বর্তমানে পড়াশোনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগে। এরআগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। মঞ্চনাটকসহ নাটকের বিভিন্ন জায়গায় তার অবাধ বিচরণ। পেশায় সাংবাদিক ও সংবাদ উপস্থাপক হলেও তার মন পড়ে থাকে নাটকের মঞ্চে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকালীন ডিবেট সোসাইটি ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নিয়মিত ছিলো নিজের পদচারণা। পেশাগত কাজ শুরু ‘সময় টেলিভিশন’র মধ্য দিয়ে। বর্তমানে ‘একাত্তর টেলিভিশনে’ রিপোর্টার ও প্রেজেন্টার হিসেবে কাজ করছেন। পেশা, নাটক, লেখালেখিসহ সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন সবসময়। এসব বিষয় নিয়েই জাগো জবসের পক্ষ থেকে তারুণ্যের এ অভিযাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন গোলাম রাব্বী।জাগো জবস : নিজের পড়াশোনার সঙ্গে আজকের মিডিয়া পেশার যোগসূত্র স্থাপন করলেন কীভাবে?মাহাদী হাসান : যেহেতু পড়াশোনার বিষয়বস্তুই ছিল কালচার ও মিডিয়া নিয়ে, তাই সাংবাদিকতায় আসার ইচ্ছাটা তখনই তৈরি হয়েছিল। আর এই আগ্রহ থেকেই মূলত গণমাধ্যমে কাজ করা।জাগো জবস : নিউজ প্রেজেন্টার হওয়ার আগে অন্য কোন চাকরিতে যোগদান করেছিলেন?মাহাদী হাসান : সময় টেলিভিশন ছিল আমার ক্যারিয়ার গড়ার প্রথম সোপান। সেখানে বার্তাকক্ষ সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করি। পাশাপাশি নিউজ প্রেজেন্টেশনও হত। এরআগে অবশ্য টুকটাক কিছু কাজ করেছি।জাগো জবস : আপনি তো পত্রিকায়ও কাজ করেছেন? মাহাদী হাসান : পত্রিকায় কাজ শুরু করি মূলত টেলিভিশনে জব শুরু করার পরে। যেহেতু আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করতে হত, তাই পত্রিকাতে বাইরের দেশের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করতাম। জাগো জবস : কার অনুপ্রেরণায় প্রোগ্রাম-উপস্থাপক হয়ে গেলেন?মাহাদী হাসান : নিউজ বা খবরের খোঁজ রাখার প্রতি আলাদা একটা ঝোঁক ছিল সবসময়। তাই চাইতাম এমন কিছু একটা করতে; যেটি আরো উৎসাহ জোগাবে। সে জায়গা থেকেই আসলে বর্তমানের অবস্থানে আসা। জাগো জবস : টিভিতে প্রেজেন্টেশন ছাড়া আপনাকে আর কী কী করতে হয়?মাহাদী হাসান : সময় টেলিভিশনে বার্তাকক্ষ সম্পাদক হিসেবে আন্তর্জাতিক রিপোর্ট তৈরি করতাম। এখন একাত্তর টেলিভিশনে উপস্থাপনাটাই বেশি করা হয়। মাঝে মাঝে রিপোর্টিংয়ে বের হই।জাগো জবস : কীভাবে একটা ভিন্ন ও আধুনিক প্রফেশনে যুক্ত হলেন?মাহাদী হাসান : একবাক্যে বলতে গেলে আসলে ইচ্ছাশক্তি ও আগ্রহটাই কাজ করেছে এখানে।জাগো জবস : এ বিষয়ে আপনার কি কোনো প্রশিক্ষণ রয়েছে?মাহাদী হাসান : সময় টেলিভিশনে যোগ দেয়ার পর, সেখানে এর ওপর তিন মাসের একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ হয়েছিল। এছাড়াও ব্যক্তি উদ্যোগে আগেও শেখার আগ্রহটা ছিলো; এখন জানার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। অবশ্য জানার তো আর শেষ নেই।জাগো জবস : অতীত ও বর্তমানের পার্থক্য কেমন উপভোগ করছেন?মাহাদী হাসান : যেকোনো সফলতা মানুষকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। নিজের চাওয়াটাকে সফল করতে পেরেছি, মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি, এটা উৎসাহব্যঞ্জক। আর আগের থেকে এখনকার পার্থক্যে বলতে পারি, জ্ঞানের পিপাসা অনেক বেড়ে গেছে।জাগো জবস : নাটক নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ ভাবনা কী?মাহাদী হাসান : ভালো একজন গণমাধ্যমকর্মী হতে চাই। আর বোঝেনই তো, প্রফেশনাললি একটা জায়গায় যুক্ত থাকলে অন্যকিছুতে সময় দেয়া খুব একটা সহজ হয়ে ওঠে না। তবে নাটক আমাকে ভাবায়। জাহাঙ্গীরনগরে থাকাকালে তো নাটকেই আমার বসবাস ছিল। যদিও সে সময়ের মঞ্চে প্রতিনিয়ত অভিনয় আমার বর্তমান কাজে অনেক হেল্প করছে। ইচ্ছা আছে নাটক-ডকুমেন্টরিসহ প্রযোজনাভিত্তিক কিছু কাজ করার।জাগো জবস : নাটককে মিস করেন না?মাহাদী হাসান : অবশ্যই মিস করি। নাটক এমন একটা পারমর্ফিং আর্ট। যেটা ব্যক্তি জীবনের সাথে আঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আর আমরা যারা মঞ্চে অভিনয় করি তারাতো আসলে ভালোবেসে কাজটা করি। কেননা অভিনয়ের সত্যিকারের জায়গাটা হলো মঞ্চ। আমার অনেক দিন, অনেক রাত মঞ্চে কেটেছে। সুতরাং নাটক-মঞ্চ-সংলাপ-রিহার্সেল-অভিনয় এগুলো মিস করাটাই স্বভাবিক। জাগো জবস : অন্যদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?মাহাদী হাসান : পরামর্শ-জ্ঞান অর্জন করতে হবে, নিজেকে দক্ষ করতে হবে, সেজন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।জাগো জবস : একটা ছোট কোর্স বা উপস্থাপনার সামান্য কিছু শিখেই কাজ শুরু করা- বিষয়টাকে আপনি কীভাবে দেখেন?মাহাদী হাসান : মিডিয়াতে কাজ করতে হলে, অবশ্যই প্রচুর জানতে হবে। চারিদিকে খোঁজ-খবর রাখতে হবে, কোথায় কী ঘটছে? পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে নিজেকে সে অনুযায়ী দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই নিজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে যাওয়া সম্ভব। জাগো জবস : সফলতা বলতে আপনি কী বোঝেন?মাহাদী হাসান : নিজেকে বুঝতে পারাই সফলতার মাপকাঠি বলে মনে করি। জাগো জবস : ক্যারিয়ারের জন্য আপনার কোনো পরামর্শ-মাহাদী হাসান : সক্রেটিসের বাণী- ‘নিজেকে জানো’।জাগো জবস : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।মাহাদী হাসান : আমাকে উপস্থাপনের সুযোগ দেয়ার জন্য আপনাকে এবং জাগো জবসকেও ধন্যবাদ।এসইউ/এবিএস

Advertisement