অমর একুশে বইমেলার ১০ম দিনে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতা ও প্রকাশকরা। এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন লেখক-প্রকাশক এবং সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। ১০ম দিনে নতুন বই এসেছে ৮৪টি।
এ দিন মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব স্টলেই দর্শনার্থী ও ক্রেতার প্রচণ্ড ভিড়। তা ঠেলেই বই কিনছেন বইপ্রেমীরা।
চয়ন প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী রাসেল সরকার জানান, মেলার শুরুর দিনগুলোতে মানুষ এসে শুধু বই উল্টেপাল্টে চলে যেত। আবার কেউ কেউ ছবি তুলেই চলে যেত। আজকে অনেকেই বই কিনছেন। সামনের দিনে এটি আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।
Advertisement
মেলায় বিকেল ৪টায় মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ড. মনিরুজ্জামানের সময়রেখা: ভাষাবিজ্ঞানের ত্রিকালদর্শী পরিব্রাজক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাশরুর ইমতিয়াজ। আলোচনায় অংশ নেন সালমা নাসরীন এবং মামুন অর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মনসুর মুসা।
এ সময় প্রাবন্ধিক মাশরুর ইমতিয়াজ বলেন, ড. মনিরুজ্জামান ভাষাবিজ্ঞানের দুরূহ পথে কেবল সরলরৈখিকভাবেই পরিভ্রমণ করেননি, বরং নজর দিয়েছেন অতীতের ভাষিক নিরীক্ষায় এবং ভবিষ্যতের ভাষা-গবেষণার সুলুক সন্ধানে। প্রতিভার মৌলিকত্বে তিনি তার স্বকীয় অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্য এবং উপভাষা গবেষণায় অসামান্য অবদানের কারণে ভাষাবিজ্ঞানের জগতে যেমন তার অবিস্মরণীয় খ্যাতি রয়েছে, তেমনি সুসাহিত্যিক ও সাহিত্য-বিশ্লেষক হিসেবেও বাংলা সাহিত্যজগতে তার নাম সুবিদিত। তিনি বাংলাদেশে অনুসৃত ভাষাবিজ্ঞানের যাবতীয় ধারাসমূহ বিন্যাস করেছেন। একই সঙ্গে তার রচনায় তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের বিকাশমানতার ধারা প্রতিভাত হয়েছে।
আলোচকেরা বলেন, ড. মনিরুজ্জামান ছিলেন আধুনিক চিন্তাধারার অধিকারী বিজ্ঞানমনস্ক একজন মানুষ। গবেষণার মাধ্যমে তিনি বাংলা উপভাষার উচ্চারণগত, ব্যাকরণগত এবং শব্দগত বৈচিত্র্য তুলে ধরেছেন। ভাষা গবেষণায় তিনি আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। তিনি উপভাষার অভ্যন্তরীণ রূপটি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন এবং উপভাষাকে উদার দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মনসুর মুসা বলেন, ড. মনিরুজ্জামান শৈশবকাল থেকেই বিভিন্ন উপভাষার সংস্পর্শে এসেছিলেন এবং একজন গবেষক হিসেবে ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার মূল্যবান গবেষণা ভবিষ্যতের গবেষকদের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা জোগাবে।
Advertisement
লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কুদরত-ই-হুদা এবং হিজল জোবায়ের। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মো. আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’, সানজিদা আহমেদ লাবণ্যের পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘নৃত্য সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং মজিবুর রহমান বিরোহীর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিরোহী শিল্পীগোষ্ঠী’-এর পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আব্দুল লতিফ শাহ, বাউল সুভাষ বিশ্বাস, আবুল কালাম আজাদ, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, এলাহী মাসুদ, কাজী দেলোয়ার হোসেন, এ টি এম গোলাম মোস্তফা, পিয়াল হাসান এবং শামিমা সুলতানা। বাদ্যযন্ত্রে ছিলেন প্রিয়ব্রত চৌধুরী (তবলা), শাহীনুর রহমান (কিবোর্ড), মো. ফায়জুর রহমান (বাঁশি), সুমন কুমার শীল (দোতারা) এবং হাসান মিয়া (বাংলা ঢোল)।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার ১১ম দিনে মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জীবন ও সাহিত্য : শাহেদ আলী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শিবলী আজাদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন নাজিব ওয়াদুদ এবং মোস্তাক আহমাদ দীন। সভাপতিত্ব করবেন চঞ্চল কুমার বোস।
এমএইচএ/এএমএ/এমএস