২৪৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চারটি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ কানাডায় পাচারের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। বাচ্চু ছাড়াও তার স্ত্রী মিসেস শিরিন আকতার, ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও শেখ রাফা হাইকে আসামি করা হয়েছে।
প্রথম মামলায় বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার ১৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুটি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে ৫৬ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার ২৬০ টাকা কানাডায় পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন
বেসিক ব্যাংকের বাচ্চু ও তার পরিবারের সম্পদ ক্রোকের আদেশ স্ত্রী-সন্তানসহ বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাদ্বিতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন বাচ্চু ও তার স্ত্রী শিরিন আকতার। শিরিন আকতারের নামে ৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তৃতীয় মামলায় বাচ্চুর সঙ্গে ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিককে আসামি করা হয়েছে।
অনিকের বিরুদ্ধে ৪৩ কোটি ৬২ লাখ ৬০৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ১ কোটি ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ৭৭ টাকার সম্পদ গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া অনিকের বিরুদ্ধে ৮৭ লাখ ৬২ হাজার টাকার সম্পদ বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
চতুর্থ মামলায় শেখ রাফা হাইয়ের সঙ্গে আসামি হয়েছেন শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু। রাফার বিরুদ্ধে ৪০ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার ১৬৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ১ কোটি ৬১ লাখ ৬ হাজার ৪৬২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করা ও ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৬২ টাকার সম্পদ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
Advertisement
জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বাচ্চুকে ২০০৯ সালে এক সময়ের লাভজনক ব্যাংক বেসিকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার।
এরপর থেকে ব্যাংকটির ঢাকার গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখায় বড় অঙ্কের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটতে থাকে।
২০২৩ সালের ১২ জুন বেসিক ব্যাংকের আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেয় দুদক। সংস্থাটির দায়ের করা মোট ৫৯ মামলার চার্জশিটের মধ্যে ৫৮টি মামলার তদন্তে নতুন আসামি হিসেবে আবদুল হাই বাচ্চু ও কোম্পানি সচিব শাহ আলম ভূঁইয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ ২০১৫ সালে দায়ের করা কোনো মামলাতেই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। যে কারণে দুদককে বারবার বিভিন্ন প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে। মামলার দীর্ঘ ৮ বছর পর চার্জশিটে আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়।
এসএম/ইএ