প্রতিবছরের মতো এবারও নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সাবদী, মীরকুণ্ডি ও দীঘলদী এলাকায় চাষ হচ্ছে ফুল। হরেকরকমের ফুল ফুটতেও শুরু করেছে। বাগানগুলোতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
Advertisement
তবে এখনো পরিপূর্ণভাবে ফোটেনি ফুল। অথচ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘনিয়ে আসছে। রমজানও বেশি দূরে নয়। রোজার সময়ে ফুল ফুটলেও সেসময়ে বিয়ে-শাদিসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফুলের চাহিদা কম থাকে। এ অবস্থায় সময়মতো ফুল না ফোটায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরজুড়েই বন্দর উপজেলার দিঘলদি ও সাবদীসহ কয়েকটি এলাকায় ফুলচাষ হয়। তবে শীত মৌসুমে প্রায় সবাই ফুলের চাষ করে থাকেন। জন্মদিন পালন, বিয়ে, মৃতের আত্মার প্রতি সম্মান প্রদর্শন, গৃহসজ্জায় ব্যবহার করা হয় এসব ফুল। এসবের পাশাপাশি বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস, বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষ, স্বাধীনতা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা থাকে বেশি। নারায়ণগঞ্জে এ চাহিদার অনেকটাই পূরণ করে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবদী, দিঘলদী ও মুকুলদী এলাকার ফুল।
আরও পড়ুন ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে ৫ লাখ টাকা বিক্রির আশা-ঢাকা থেকে ফুলের বাগান দেখতে এসেছেন মেহজাবিন। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। ডা. মেহজাবিন বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি বন্দরে। ঢাকায় থাকি বলে এখানে তেমন আসা হয় না। ছুটির দিনে এলাম ফুলের বাগান দেখার জন্য।’
Advertisement
জিনাত ফেরদৌস আঁখি নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফুলের বাগান দেখতে এসেছি। প্রতিবছরই এসময়ে আসি। এখানে এলে মনটা ভালো হয়ে যায়।’
কথা হয় ফুলচাষি খোকন চন্দ্র দাসের সঙ্গে। এবছর ১৫ শতাংশ জমিতে ফুলচাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এবার জমির পানি শুকিয়েছে দেরি করে। যে কারণে সময়মতো আমরা ফুল চাষ করতে পারেনি। দেরি করে ফুলের চারা লাগানো হয়েছে। ফলে বিক্রির মৌসুম চলে এলেও এখনো ফুল ফোটেনি।’
আরও পড়ুন দিনাজপুরে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে টিউলিপ বাহারি ফুল সুবাস ছড়াচ্ছে চট্টগ্রামের ডিসি পার্কেখোকন চন্দ্র বলেন, ‘সামনে রোজা। রোজার সময় ফুল ফুটলেও বিক্রি করতে পারবো না। কেননা রোজার সময়ে ফুল চলে না। বিয়ে-শাদি অনেক অনুষ্ঠানই বন্ধ থাকে। ফুল বিক্রি করতে না পারলে আমার ক্ষতি হয়ে যাবে।’
আমীর আলী নামের আরেক ফুলচাষি জাগো নিউজকে বলেন, ‘১০-১২ বছর ধরে ফুল চাষ করছি। গতবছর ভালোই লাভ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর দেরিতে ফুল ফুটেছে। যে সময় পরিপূর্ণভাবে ফুল ফুটবে, সে সময় বিক্রি করতে পারবো না। ফুলের চাহিদা থাকবে না। তারপরও দেখি কপালে কী আছে!’
Advertisement
কৃষক জাকির হোসেন বলেন, দিবস ছাড়া ফুলের চাহিদা তেমন থাকে না। যে কারণে এবার ফুল বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।
বন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত বলেন, এ বছর ৮০ হেক্টর জমিতে ফুলচাষ হয়েছে। আমাদের লক্ষমাত্রাও এরকমই ছিল। তবে রোজা চলে আসায় কৃষকদের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে যে টার্গেট, তা হয়তো পূরণ হবে না। তারপরও আমরা কৃষকদের পাশি আছি।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসআর/জিকেএস