বছরে আয় ৩ লাখ

ড্রাগন চাষে সফল খোরশেদ আলম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ১২:৫৭ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০২৪

কুড়িগ্রামে শখের বশে ড্রাগন চাষ করে বাণিজ্যিক চাষাবাদের স্বপ্ন দেখছেন খোরশেদ আলম। শুরুতে ৩০টি গাছ থেকে এখন তার বাগানে ২ হাজারের বেশি ড্রাগন গাছ। বছরে লক্ষাধিক টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেন তিনি। খোরশেদ আলম কুড়িগ্রাম পৌর শহরের রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন পুরাতন হাসপাতালপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী দবির উদ্দিনের ছেলে।নিজের অন্য ব্যবসার পাশাপাশি ইউটিউবে ড্রাগন চাষ পদ্ধতি দেখে উদ্যোগ নেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর চেষ্টায় আজ ড্রাগন ফল চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

খোরশেদ আলমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, থাইল্যান্ড বেড়াতে গিয়ে ড্রাগন ফলের বাগান দেখেন। সেখান থেকে ড্রাগনের কাটিং এনে প্রথমে ছাদে একটি ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করেন। দেড় বছর পর ফুল-ফল দেখে উদ্বুদ্ধ হন। পরে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৩০টি ড্রাগনের চারা এনে নিজের জমিতে রোপণ করেন। এখন তার ৫০ শতক জমিতে ২ হাজারের বেশি ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

ড্রাগন চাষে সফল খোরশেদ আলম

প্রতিটি চারাগাছে ১০০ টাকা খরচে সব মিলে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা। দীর্ঘমেয়াদী এ প্রজেক্ট থেকে এখন পর্যন্ত লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। খোরশেদ আলমের ড্রাগন চাষ দেখে কুড়িগ্রামে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে জেলায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষে এগিয়ে আসছেন অনেকেই।

খোরশেদ আলম বলেন, ‘ড্রাগন ফল দীর্ঘমেয়াদী আবাদ। এটি লাভজনক চাষাবাদ। প্রথমে একটু খরচ হলেও পরে খরচ তেমন নেই। অন্য আবাদে যেমন সব সময় গাছের যত্ন, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়; সেদিক থেকে ড্রাগন চাষাবাদ খুবই ভালো। সামান্য পরিচর্যা করতে পারলে ড্রাগন ফল চাষ করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে ইউটিউব থেকে ড্রাগন ফল চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হই। পরে একটি গাছ লাগাই। তারপর ৩০টি গাছ এনে স্বল্প পরিসরে চাষাবাদ শুরু করি। বাগানের বয়স ৫ বছর। বর্তমানে ৫০ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান। এখানে গাছের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি। বছরে প্রায় ২-৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি করা হয়।’

বাগানের পরিচর্যায় নিয়োজিত রিপন বলেন, ‘ড্রাগন চাষে তেমন কোনো পরিচর্যার দরকার হয় না। ফুল আসার এক মাসের মধ্যে ফল ধরে। এখানে ৩ জাতের ড্রাগন ফলের গাছ আছে। এখানে চায়না ও ভিয়েতনাম পদ্ধতিতে ড্রাগনের গাছের চারা লাগানো হয়েছে। গত বছর প্রায় ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি। এ বছর আবহাওয়া ভালো না থাকায় ফলন একটু কম হয়েছে। আগামী বছর ভালো কিছু আশা করছি।’

ড্রাগন চাষে সফল খোরশেদ আলম

বাগান দেখতে আসা মো. ইমরান বলেন, ‘আমরা বাজার থেকে ড্রাগন ফল কিনি। এই প্রথম বাগান দেখতে এসে খোরশেদ আলম ভাইয়ের কাছ থেকে ড্রাগন ফল কিনলাম। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। দেশের কৃষি বিভাগ যদি পূর্ণ সহযোগিতা করে, তাহলে আমাদের মতো বেকার যুবকরা ড্রাগন ফল চাষ করে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবেন।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাহিদা আফরিন বলেন, ‘কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ৪টি ড্রাগন ফলের বাগান আছে। ১৫০-২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ড্রাগন ফল। তবে কুড়িগ্রামের মানুষ ড্রাগন ফলের ওপর বেশি অভ্যস্ত নয়। অন্য জেলায় ড্রাগন ফলের ব্যাপক চাহিদা আছে।’

ফজলুল করিম ফারাজী/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।