বিএডিসি খামারে ৩০০ একর জমিতে আউশের বীজ চাষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২৪

নীলফামারীর বিএডিসির ডোমার উপজেলার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদনের খামারের পতিত জমিতে উৎপাদন হয়েছে আউশ ধানের বীজ। শুধু বীজ আলু উৎপাদনের ওই খামারের ৩০০ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে আউশ ধান। যা থেকে ৪০০ টন ভিত্তি ধান বীজ উৎপাদনের আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই পরিমাণ বীজ দিয়ে আউশ আবাদ করা যাবে ৪০ হাজার একর জমিতে। এ ছাড়া অবীজ ধান পাওয়া যাবে ৬০-৭০ টন। যার বাজার মূল্য ২ কোটি টাকার ওপরে। ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদনের জন্য ৬৫০ একর জমিতে বিএডিসির বিশেষায়িত খামার এটি। প্রতি বছর আলু আবাদের পর সীমিত আকারে গম চাষ হতো। এরপর দীর্ঘ সময় এসব জমি পতিত থাকতো।

বিএডিসি খামারে ৩০০ একর জমিতে আউশের বীজ চাষ

গত দুই বছর ধরে পতিত জমিগুলোতে আউশের ভিত্তি বীজ উৎপাদনে কয়েক জাতের ধানের আবাদ করা হচ্ছে। এতে পড়ে থাকা এসব জমির আবাদ একদিকে খরাসহিষ্ণু আউশ ধান বীজের সংকট কাটাচ্ছে, অন্যদিকে বোরো আমন মৌসুমের মধ্যবর্তী সময়ে কর্মহীন কৃষি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে। তাছাড়া খামারে অসময়ে একটি ফসল উৎপাদনে বাড়তি আয় আসছে।

খামারের সহকারী পরিচালক সুব্রত মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগে খামারের জমিতে বছরে দুইটি ফসল হতো। একটি হলো ভিত্তি বীজ আলু, অপরটি গম। এখন আউশ বীজ ধান আবাদ শুরু হওয়ায় বছরে তিনটি ফসল উৎপাদন হচ্ছে। বর্তমানে জমির পাকা ধান কাটা-মাড়াই চলছে।’

খামারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু তালেব মিঞা জাগো নিউজকে বলেন, ‘খামারে এক নাগাড়ে বীজ আলু চাষ করায় নানা রোগ বাড়ছে। আউশ আবাদের পর ওই জমিতে আলু চাষ করলে ব্যাকটেরিয়া জাতীয় রোগ-বালাই কমবে। পাশাপাশি মানসম্মত আউশ বীজের সংকট কাটবে। ২০২০-২১ আউশ ধান উৎপাদন মৌসুমে একেবারে পতিত থাকা ১৮৭ একর জমিতে ২০২১ সালে উৎপাদন মৌসুমে ২৪০ একর ও ২০২২ সালে উৎপাদন মৌসুমে ব্রিধান-৯৮ জাতের ২৫৫ একর জমিতে আউশ ধান বীজ উৎপাদন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। বর্তমানে চলতি আউশ উৎপাদন মৌসুমে ৩০০ একর জমিতে ব্রিধান-৯৮ জাতের ধান বীজ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’

বিএডিসি খামারে ৩০০ একর জমিতে আউশের বীজ চাষ

তিনি বলেন, ‘আউশ ধানের উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এপ্রিল মাসের ১৫-২০ তারিখের মধ্যে চারা রোপণের পর থেকে মাত্র ৮০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করা যায়। ধান থেকে ধান উৎপাদনের মোট সময় লাগে ১০৩ থেকে ১০৫ দিন। বর্তমানে কৃষক পর্যায়ে রবি মৌসুমে অন্যতম লাভজনক শস্য ভুট্টা। ভুট্টা চাষের পরে আমন রোপণের আগপর্যন্ত জমি পতিত থাকে। যা আউশ ধান আবাদের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। এ সময় জমি পতিত না রেখে মাত্র ৮০ দিনের ব্যবধানে আউশ চাষ করে প্রতি বিঘায় ১৫-১৭ মণ ধান উৎপাদনের পর স্বল্প মেয়াদে আমন ধানসহ আলু উৎপাদন সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘চলতি আউশ মৌসুমের ওই খামারের ৩০০ একর জমির ধান উৎপাদন কার্যক্রম শতভাগ যান্ত্রিককরণের মাধ্যম বর্তমানে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান বীজ সংগ্রহ করে দানা শস্য গ্রেডিং মেশিন দ্বারা ধান বীজ গ্রেডিং করে ধান সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বীজ ধান পাওয়া যাবে ৬০-৭০ টন। প্রতি টন বীজ ধানের মূল্য ৫০ হাজার টাকা হিসাবে বিক্রয় মূল্য ২ কোটি টাকার ওপরে। অসময়ে ধান আবাদে এলাকার ২০০ থেকে ৩০০ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।’

ইব্রাহিম সুজন/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।