জমি ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি

বেশি লাভের আশায় রাজবাড়ীতে বেড়েছে তামাক চাষ

রুবেলুর রহমান
রুবেলুর রহমান রুবেলুর রহমান , জেলা প্রতিনিধি রাজবাড়ী
প্রকাশিত: ০৩:২৬ পিএম, ০২ মে ২০২৪

রাজবাড়ীতে বেড়েছে তামাক চাষ। দরিদ্র কৃষক নগদ অর্থসহ বিশেষ সুবিধা পাওয়ায় তামাক চাষে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছেন। এই তামাক পাতা শুকানো হচ্ছে বাড়ির উঠান, রাস্তার পাশ ও বাগানসহ বিভিন্ন স্থানে। ফলে এলাকার পরিবেশেও তামাকের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। নানা রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে সব বয়সী মানুষ।

কার্তিক মাসে তামাক চাষ শুরু করে চৈত্র-বৈশাখ মাস পর্যন্ত সম্পন্ন হয়। বিঘাপ্রতি জমিতে সব মিলিয়ে তাদের প্রায় ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হলেও সেখান থেকে প্রায় ৭-১০ মণ তামাক পান চাষিরা। যার মূল্য প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। বর্তমানে ৬০ কেজির বেল্ট করে কোম্পানির এজেন্টের কাছে বিক্রি করেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর রাজবাড়ীতে ৩০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। ২০২৩ সালে চাষ হয়েছিল ২৮ হেক্টর, ২০২২ সালে ১৩ হেক্টর, ২০২১ সালে ২০ হেক্টর ও ২০২০ সালে চাষ হয়েছিল ৩০ হেক্টর জমিতে। এ বছর সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলায়।

বেশি লাভের আশায় রাজবাড়ীতে বেড়েছে তামাক চাষ

তামাক চাষি নাজিমউদ্দিন ব্যাপারী, কবির মণ্ডল, শুকুর আলীসহ কয়েকজন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তামাক চাষ করলেও তেমন সমস্যা দেখা দেয় নাই। তামাকে শারীরিক ক্ষতি হয়, সেটা জানি। তবে অন্য ফসলের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় চাষ করছি। একটি টোব্যাকো কোম্পানি থেকে চাষের জন্য নগদ টাকা, সারসহ অন্যান্য সুবিধা দেয়।’

স্থানীয় মো. ইব্রাহিম, জাহিদ হাসান, আব্দুল কাদেরসহ কয়েকজন বলেন, ‘আগে নদীর তীর দিয়ে তামাকের চাষ দেখা গেলেও এ বছর উঁচু জমিতে আবাদ হয়েছে। যেখানে ধানসহ অন্য ফসল চাষ হতো। তামাকের গন্ধে পাশ দিয়ে যাওয়া যায় না। স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। ভালোভাবে নিঃশ্বাস নেওয়া যায় না। সরকারের উচিত তামাক চাষ ও কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়া। যেখানে তামাক চাষ হয়; সেখানকার মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়।’

বেশি লাভের আশায় রাজবাড়ীতে বেড়েছে তামাক চাষ

মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারমান টুকু মিজি বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকায় তামাক চাষ হয়। তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি শরীর ও জমির ক্ষতি হয় বলে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে অবহিত করছি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দের চর এলাকায় কিছু তামাক চাষ হচ্ছে। প্রচুর সুবিধা পাওয়ার লোভে কৃষকেরা তামাক চাষ করছেন। আমরা তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি সারসহ অন্যান্য সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছি। প্রশিক্ষণের সময় মাটির ক্ষতির বিষয়েও বলা হয়। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ না থাকায় ক্ষতির দিক তুলে ধরে কৃষকদের বোঝানো হচ্ছে।’

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।