রঙিন ফুলকপিতে প্রথমবারেই সফল আলী হোসেন
পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবার রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা নাগরী ইউনিয়নের বির্তুল গ্রামের কৃষক অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো. আলী হোসেন (৭৫)। তিনি প্রতি বছর সাদা ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রোকলি চাষ করলেও এবার হলুদ ও বেগুনি ফুলকপি চাষ করেছেন। স্থানীয় বাজারেও সাড়া ফেলেছে তার রঙিন ফুলকপি। কিনছেন অনেকেই, বিক্রিও হচ্ছে বেশি দামে। আশানুরূপ দাম পাওয়ায় কৃষকও খুশি। তাকে দেখে আশপাশের কৃষকেরাও এ ফুলকপি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
কৃষক আলী হোসেন জানান, রঙিন ফুলকপি চাষে প্রথমে সাহস পাচ্ছিলেন না। ভয় ছিল লোকসানের। পরে স্থানীয় কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শে উদ্যোগী হন। প্রথমবারেই তার সফলতা দেখে উৎসাহ পাচ্ছেন অন্যরাও। আগামীতে কৃষি অফিসের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে ২০ শতক জমিতে শুধু রঙিন ফুলকপি চাষ করবেন বলেও জানান তিনি।
আলী হোসেন বলেন, ‘মাঠে আমার অনেক কৃষি জমি থাকলেও মাত্র ২ শতক জমিতে শুরু করি। কৃষি অফিস থেকে পাওয়া বীজ দিয়ে প্রায় ২০০ রঙিন ফুলকপির চারা লাগিয়েছিলাম। সবগুলোই ভালোভাবে বড় হয়েছে। এখন বাজারে ৬০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি করি। সেগুলো আবার খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকা কেজিতে। চাষে খরচ মোটামুটি একই রকম। তবে জৈব সার দিতে হয় বেশি। সাদা ফুলকপির মত রঙিন ফুলকপিও আকারে বেশ বড় হয়।’
আরও পড়ুন
• রঙিন ফুলকপি চাষে লাভবান ঈশ্বরদীর শফিকুল
• রঙিন ফুলকপি চাষে স্বপ্ন দেখছেন কৃষক
• সীতাকুণ্ডে ১২ হাজার রঙিন ফুলকপি চাষ
বির্তুল গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সাদা ফুলকপির মতই রঙিন ফুলকপির চাষ হবে কি না, প্রথমে সেটি নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু প্রতিবেশী আলী হোসেন চাচা ২ শতক জমিতে সফলভাবেই চাষ করেছেন। আগামীতে কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে আমিও এ ফুলকপি চাষ করবো।’
একই গ্রামের কৃষক রোপন শেখ বলেন, ‘আলী হোসেন দাদার রঙিন ফুলকপির ক্ষেত দেখতে আসছেন অনেকে। কেউ কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন। আমাদের কাছে এ ধরনের সবজি চাষ এবারই প্রথম।’
নাগরী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনির উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের কৃষি অফিসারের পরামর্শ অনুযায়ী এবারই প্রথম রঙিন ফুলকপির বীজ সংগ্রহ করে কৃষক আলী হোসেনকে দিয়েছি। তিনি ২০০ চারা রোপণ করেছেন। পরীক্ষামূলক এ ফুলকপির ফলন দেখে কৃষক খুশি। আশপাশের কৃষকেরাও এ ফুলকপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘কালীগঞ্জ উপজেলায় এ বছর ১২৯ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়েছে। তবে এরমধ্যে বেশিরভাগই সাদা ফুলকপি। এবারই প্রথম রঙিন ফুলকপি চাষ হচ্ছে। স্থানীয় এক কৃষক রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করায় পরীক্ষামূলকভাবে তাকে সহায়তা করেছি। তবে রঙিন ফুলকপি চাষে বাড়তি কোনো খরচ নেই। সাদা ফুলকপির মতোই খরচ।’
আব্দুর রহমান আরমান/এসইউ/জিকেএস