কিশোরগঞ্জের হাওরে মাসকলাই চাষে সাফল্য

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:৩৬ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৪

কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় বিনা চাষে মাসকলাই উৎপাদনে সফল হয়েছে কিশোরগঞ্জ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) সরেজমিন গবেষণা বিভাগ। ৮০-৮৫ দিনে কৃষক এ মাসকলাই ঘরে তুলতে পারবেন। এতে আমিষের পরিমাণ ২১-২৪ শতাংশ। ফলন হেক্টর প্রতি ১৫০০-১৬০০ কেজি। এ মাসকলাইয়ের জাত হলদে মোজাইক রোগ প্রতিরোধী।

বিএআরআই সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল ইফাদের অর্থায়নে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের সমন্বয়ে কনসর্টিয়াম ফর স্কেলিং আপ ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার ইন সাউথ এশিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে এ বছরই প্রথম কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখলা হাওরে ১০ একর জমিতে এ জাতের মাসকলাই আবাদ করা হয়। স্থানীয় কৃষক মো. কুতুব উদ্দিন ও আবুল হাসেম মুন্সির নেতৃত্বে ২৫ জন কৃষকের মাঠে গত বছরের ৩০ অক্টোবর বারি-৩ জাতের মাসকলাই আবাদ করা হয়।

jagonews24

আরও পড়ুন: সরিষা ক্ষেতে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা 

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৯৬ সালে বারি মাস-৩ নামে মাসকলাইয়ের একটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করে। স্থানীয় জাতের চেয়ে এই বীজের আকার বড় হয়। এ জাতের শুঁটিতে ঘন শুং আছে। হাওর এলাকার যে সমস্ত জমি থেকে অক্টোবরের শেষে পানি নেমে যায়, সে সব জমিতে এটি চাষ করলে সহজেই বোরো ধান আবাদ করা যায়। ছিটিয়ে বপন করলে হেক্টর প্রতি ৩৫-৪০ কেজি বীজ লাগে। বিঘাপ্রতি ইউরিয়া সার লাগে ৫-৬ কেজি, টিএসপি ১০-১৩ কেজি, এমওপি ৫-৬ কেজি, জিপসাম ৭-৮ কেজি, বোরন ১-১.৫ কেজি। সব সার জমিতে বীজ বপনের আগে প্রয়োগ করতে হয়।

কৃষক আবুল হাসেম মুন্সি বলেন, ‘নতুন মাসকলাইয়ের জাতটি সম্পূর্ণ বিনা চাষে আবাদ করা হয়েছে। এর আগে কৃষি গবেষণা বিভাগ কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং বিনা মূল্যে বীজ দিয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই ফসলের কর্তন শুরু হবে। ফলনও দেশি মাসকলাইয়ের চেয়ে ভালো হয়েছে। আমাদের জমি দেখে স্থানীয় আরও অনেক কৃষক এ মাসকলাই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’

jagonews24

আরও পড়ুন: পাবনায় ৯ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে হালি পেঁয়াজ চাষ 

কিশোরগঞ্জ বারি সরেজমিন গবেষণা বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন বলেন, ‘বারি-৩ জাতের মাসকলাই বিনা চাষেই আমরা সফল হয়েছি। আশা করছি এটি হাওরের কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলবে। এবারই প্রথম ২৫ জন কৃষক ১০ একর জমিতে জাতটি চাষ করে।’

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, ‘এ জাতের মাসকলাই কৃষকদের মাঝে বিপুল উৎসাহের সৃষ্টি করবে। এই প্রথমবার হাওরে এর ফলনও আশানুরূপ হয়েছে।’

এসকে রাসেল/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।