তিস্তার জেগে ওঠা চরে ফসলের হাতছানি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ১২:৩৬ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩

শুষ্ক মৌসুম আসতে এখনো অনেক বাকি। মাত্র ২ মাসেই খরস্রোতা তিস্তা নদী এখন পানিশূন্য হয়ে বালুচরে পরিণত হয়েছে। নাব্য হারিয়ে তিস্তা এখন মৃতপ্রায়। সেই তিস্তার চর এখন ফসলের জমি। চারিদিকে সবুজের হাতছানি। সবুজের মাঝে কৃষকের স্বপ্ন। তিস্তার জেগে ওঠা চরে ফসল ফলাতে ব্যস্ত কৃষক।

কৃষকেরা চাষ করছেন আলু, ভুট্টা, রসুন, গম, মিষ্টি কুমড়া, গাজর, পেঁয়াজসহ ১০ রকমের ফসল। বানের পানিতে সম্বল হারানো মানুষগুলো এখন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতি বছর তিস্তার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকেরা চরে ফসল ফলানো শুরু করেন।

এদিকে তিস্তা নদী ভারতের মেখলিগঞ্জ হয়ে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামের পশ্চিম দিকে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশে প্রায় ১১২ কিলোমিটার পথ প্রবাহিত হয়ে তিস্তা কুড়িগ্রামের চিলমারীতে যমুনার সঙ্গে মিশেছে।

jagonews24

আরও পড়ুন: শায়েস্তাগঞ্জে বারোমাসি তরমুজে সফল ২ বন্ধু 

ভারতের গজল ডোবায় তিস্তা নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করায় এবং পানির ন্যায্য হিস্যা না দেওয়ায় ধীরে ধীরে তিস্তা নদী পানিশূন্য হয়ে যাচ্ছে। তিস্তা তীরবর্তী মানুষ নিদারুণ ভোগান্তি পোহাচ্ছে। বর্ষায় ভারত অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় নদীর দুই পাড়ের জমি, ঘর-বাড়ি ভেঙে দেয়। খরা মৌসুমে পানির অভাবে ইরি-বোরোসহ অন্য ফসলের চাষাবাদ করতে পারেন না কৃষকেরা।

তিস্তাপাড়ের সালেহা বেগমের বসতবাড়ি ভেঙেছে পাঁচবার। থাকেন সরকারি জমিতে। এবার তিস্তার পানি শুকিয়ে তার জমি ভেসে উঠেছে। সেই জমিতে ভুট্টা, গম, পেঁয়াজ লাগিয়েছেন। ভালো ফসল পেলে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে তার পরিবার। সালেহা বেগম বলেন, ‘ঘর-বাড়ির জায়গা-জমি সব তিস্তায় গিলে খেয়েছে। আমরা নিস্ব হয়ে গেছি। প্রতি বছর নদীর পানি শুকালে বালুচরে চাষাবাদ করি। তাতেই সংসার চলে।’

https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/in-2-20231222123625.jpg

হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী গ্রামের কৃষক আইনুল হক বলেন, ‘প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে তিস্তার পানি শুকিয়ে যায়। এতে তিস্তায় বড় বড় চর জেগে ওঠে। চরগুলোতে সাধারণ কৃষকেরা ফসল ফলান। তিস্তাপাড়ের মানুষের একমাত্র সম্বল চরের জমিতে চাষাবাদ করে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকে।’

আরও পড়ুন: নীলফামারীতে কলার সাথী ফসলে আগ্রহী চাষিরা 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ‘তিস্তার পানি এখন কমতে শুরু করছে। পানি কম থাকায় ব্যারাজের সব গেট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে উজানে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছে।’

লালমনিরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, ‘এবার তিস্তায় জেগে ওঠা চরে ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। তিস্তাপাড়ের কৃষকদের পরামর্শ দিতে উপজেলা কৃষি উপসহকারী অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

রবিউল হাসান/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।