মিরসরাইয়ে আমন কাটা শুরু

৮৯ হাজার ৩২৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের আশা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ১২:০০ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। দুই দফায় ঘূর্ণিঝড়ের ধকল পার করে এখন ধান ঘরে তুলছেন তারা। এবার উৎপাদিত ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯ হাজার ৩২৫ মেট্রিক টন। চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৯ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকেরাও খুশি। তবে ধানের ন্যায্য মূল্য নিয়ে চিন্তিত তারা।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ১৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছড়া, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, মিঠানালা, মঘাদিয়া, খৈয়াছড়া, মায়ানী, হাইতকান্দি, ওয়াহেদপুর ও সাহেরখালী ইউনিয়নে আমন ধানের চাষ করা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ইছাখালী ইউনিয়নে ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ জমিতে পাকা ধানের সমারোহ। দুচোখ যতটুকু যাচ্ছে ধানের ক্ষেত চোখে পড়ছে। কৃষকেরা কেউ মাঠে ধান কাটছেন। কেউ ধান বাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেক জমিতে কেটে শুকানোর জন্য রেখে দিয়েছেন।

jagonews24

আরও পড়ুন: অগ্রহায়ণে নবান্ন উৎসবের দেশে

হিঙ্গুলী ইউনিয়নের মধ্যম আজমনগর গ্রামের কৃষক মোকাররম হোসেন বলেন, ‘এবার আমি প্রায় দেড়কানি (১৮০ শতক) জমিতে আমন চাষ করেছি। আমার বেশিরভাগ ধান কাটা হয়েছে। আরও কিছু জমির ধান এক-দুদিনের মধ্যে কাটতে পারবো।’

ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরৎ এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি এবার প্রায় ১২০ শতক জমিতে আমনের চাষ করেছি। বৃষ্টির কারণে রোপা আমন লাগাতে দেরি হয়েছে। জমিতে রোপা লাগানো নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তবে ধানের অবস্থা ভালো। কিছু জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকি জমির ধান আগামী ১০ দিনের মধ্যে কাটা শুরু করবো।’

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ার পরও আমন আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। যদি ঠিক সময়ে পানি পাওয়া যেত, তাহলে আরও জমিতে চাষ করা সম্ভব হতো। উপজেলাজুড়ে ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে উফশি জাতের, ২০০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১০৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।

jagonews24

আরও পড়ুন: লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০০ হেক্টর বেশি চাষের সম্ভাবনা

ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরৎ এলাকার কৃষক সালেহ আহম্মদ বলেন, ‘এবার সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। সেই শঙ্কা সত্যি হয়নি। ভালো ফলন হয়েছে। তবে ধানের ভালো দাম পাবো কি না, এ নিয়ে চিন্তায় আছি।’

এছাহাক ড্রাইভারহাট এলাকার বাসিন্দা ধানের ক্রেতা মো. আবু হানিফ বলেন, ‘এখনো বাজারে আমন ধান খুব বেশি আসছে না। আরও ১০ থেকে ১৫ দিন পর পুরোদমে ধান উঠবে। আমরা এখন প্রতি মণ ধান ১১০০ টাকায় কিনছি। বাজারে ধান বেশি এলে দাম আরও কমতে পারে।’

মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এরই মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বেশ কয়েকদিন ধান কাটা বন্ধ ছিল। তা না হলে আরও বেশি জমির ধান কাটা হতো। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় বেশিরভাগ জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে মৌসুমের শেষদিকে। তারপরও ফলন অনেক ভালো হয়েছে।’

এম মাঈন উদ্দিন/এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।