রঙিন মাছ চাষে জীবন রঙিন ইমরানের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ০৮:২৫ এএম, ১৪ আগস্ট ২০২৩

জয়পুরহাটে বাহারি রঙের মাছ চাষ করে ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন তরুণ উদ্যোক্তা ইমরান হোসেন। শখের বশে মাত্র দুটি রঙিন মাছ কিনে এখন তার হ্যাচারিতে ৩৮ প্রজাতির প্রায় ১০ লাখ মাছ। বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় বেশ লাভবান হচ্ছেন। তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই এ মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

শখের বশে বা সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকে অ্যাকোরিয়ামে এসব রঙিন মাছ রাখেন। প্রথমদিকে এসব মাছ বিক্রি নিয়ে ইমরানের কিছুটা সমস্যা থাকলেও বর্তমানে প্রচুর চাহিদা আছে। আশেপাশের কয়েকটি জেলায় সরবরাহ হচ্ছে এ মাছ। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রঙিন মাছ চাষ জেলার সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে।

jagonews24

সরেজমিনে জানা যায়, সদর উপজেলার দুর্গাদহ বাজারের আব্দুর রহমানের ছেলে ইমরান হোসেন। এইচএসসি পাস করার পর ছুটেছেন চাকরির পেছনে কিন্তু চাকরি পাননি। এ অবস্থায় ২০২০ সালে শখের বশে দুটি রঙিন মাছ কিনে আনেন বাড়িতে। এরপর সেই মাছ কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। সে সময় বাড়ির ছোট একটি জায়গায় দুটি মাছের ডিম থেকে বাচ্চা প্রজনন করেন। পরে বিস্ময়কর ফলাফল পান তিনি। দুটি মাছ থেকেই বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন ‘ইমরান অ্যাকোরিয়াম ফিশ হাউজ’।

আরও পড়ুন: ঈশ্বরদীতে পুকুরপাড়ে সবজি চাষে সফল মাছ চাষিরা

jagonews24

ইমরান হোসেন জাগো নিউজকে জানান, একটি থেকে বর্তমানে ৩টি মাছের হ্যাচারি আছে তার। এখানে কাজ করে প্রায় ১০ থেকে ১২ জন। ডিম থেকে প্রজনন হচ্ছে পোনাও। তাই প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে মাছের সংখ্যা। এসব হ্যাচারিতে আছে গোল্ড ফিশ, কমেট, কই কার্ভ, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি কই, মলি, গাপটি, অ্যাঞ্জেলসহ বিভিন্ন রঙের ৩৮ প্রজাতির মাছ। হ্যাচারিতে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। এরই মধ্যে প্রায় ৮ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে আরও ২০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হবে। এছাড়া পুকুরেও এসব মাছ চাষ করার পরিকল্পনা আছে।

মাছের হ্যাচারি দেখতে আসা সুমন, উত্তমসহ অনেকেই বলেন, ‘ইমরান খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। নারা রঙের মাছের এ হ্যাচারি দেখে অনেক ভালো লেগেছে। আমাদেরও ইচ্ছা আছে এরকম হ্যাচারি করার।’

jagonews24

জয়পুরহাট জাকস ফাউন্ডেশনের মৎস্য কর্মকর্তা রাশিদুল ইসলাম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ইমরান একজন সফল উদ্যোক্তা। আমরা এখানে কাজ করছি। বিভিন্ন ধরনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছি। তার এখান থেকে প্রচুর মাছ বাইরে বিক্রি হচ্ছে। তার দেখাদেখি আরও প্রায় ১০ জন মাছ চাষে যুক্ত হচ্ছেন।’

আরও পড়ুন: বেশি ফলনেও হতাশ চরাঞ্চলের কৃষকরা 

জয়পুরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরদার মহীউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘রঙিন মাছ চাষ করে ইমরান হোসেন সফল হয়েছেন। তিনি ডিম থেকে মাছের পোনাও প্রজনন করছেন। এ সেক্টরের অপার সম্ভাবনা আছে। এ চাষ সম্প্রসারণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।