শরীয়তপুরে পাটের দামে খুশি চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০১:০৪ পিএম, ১৯ জুলাই ২০২৩

শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পাট কাটা ও জাগ দেওয়া নিয়ে কৃষকেরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পাটের ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে কৃষকেরা পাট চাষ করেছেন ৩০ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে দেশীয় জাতের ৩ হাজার ৫০ হেক্টর, তোষা জাতের ২১ হাজার ৮০০ হেক্টর, কেনাফ জাতের ৩ হাজার ৯৮০ হেক্টর এবং মেস্তা জাতের ১ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।

জেলা পাট উন্নয়ন অফিস জানায়, এ বছর প্রত্যেক কৃষককে ৯.৫ কেজি করে সার বিতরণ করা হয়েছে। তবে পাটের বীজ প্রণোদনা বিতরণ অনুযায়ী ১৪ হাজার ৬ জন কৃষক পাট চাষ করেছেন। ৪ হাজার ৪২২ একর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এতে প্রতি একরে ৩,৪৭০ মণ হিসেবে মোট পাট উৎপাদন হওয়ার কথা ১,৬০,৩৯৩ মণ। গত বছরের চেয়ে ফলন ৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর জেলায় মোট ১৪ টন ৬ কেজি পাট বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: পরিবেশের ওপর পাটের প্রভাব

সদর, ভেদরগঞ্জ, সখিপুর, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট কেটে নদী-নালা, খাল-বিল, ডোবায় জাগ দেওয়া ও আঁশ ছাড়ানো নিয়ে ব্যস্ত পাট চাষিরা। পরিবার নিয়ে মেস্তা পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত সবাই। তবে এখন মেস্তাপাট কাটছেন। এর পরই নবী পাট ও বগি পাট কাটবেন তারা।

ভেদরগঞ্জের কার্তিকপুরের পাট চাষি মরন গাজী বলেন, ‘এবার সরকারিভাবে পাটের বীজ পেয়েছিলাম। পাটের ভালোই ফলন হয়েছে। এখন মেস্তা পাট কেটে পানিতে ভিজিয়ে আঁশ ছাড়িয়ে পরিষ্কার করছি। শুকিয়ে বাজারে নিলে প্রতি মণ পাট ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।’

সখিপুর এলাকার পাট চাষি দুদু মিয়া মাদবর বলেন, ‘এর আগে ২ একর জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। ফলন ভালো পেয়ে এবার আরও ১ একর বাড়িয়ে মোট ৩ একর জমিতে পাট ও মেস্তা রোপণ করেছি। এবার দ্বিগুণ ফলন হয়েছে। এখন পাট কেটে জাগ দিচ্ছি। পাট শুকিয়ে বাজারে নিলে মনে হয় এবার দাম একটু বেশি পাবো।’

আরও পড়ুন: পাটের জৈবিক ও ফার্মাকোলজিক্যাল ক্রিয়াকলাপ

মহিষার ইউনিয়নের কৃষক আকবর হোসেন সিকদার বলেন, ‘আমি প্রায় ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। এবার ভালোভাবেই পাট কেটে জাগ দিতে পারছি। এ বছর বাজারে পাটের প্রতি মণের দাম গত বারের তুলনায় দ্বিগুণ আছে। গত বছর পাটের প্রতি মণের দাম ছিল ২ হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা। এবার শুরুতে ৪ হাজার টাকা দাম পাচ্ছি। পরে আরও দাম বাড়তি পাবো বলে আশা করি। এবার পাট বুনে দ্বিগুণ লাভ করতে পারবো।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম একটু বেশি। এ বছর পাটের রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ ছিল না। বাজার খুবই ভালো আছে। বাজারে পাটের দাম আরও বাড়তে পারে। এবার কৃষকেরা লাভবান হবেন। ভবিষ্যতেও পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে।’

এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।