কলা চাষে দেড় লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা আলাউদ্দিনের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:৩১ পিএম, ১৫ জুন ২০২৩

আলাউদ্দিন (৫৫) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের আদিত্যপাশা গ্রামের বাসিন্দা। বাড়ির পাশের ২০ শতক জমিতে কৃষি অফিসের সহায়তায় জি-নাইন জাতের কলা চাষ করেছেন। সেই কলা চাষেই ভাগ্য খুলেছে তার। এ জমি থেকেই বিনা খরচে দেড় লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তার সফলতা দেখে অন্য কৃষকও এ জাতের কলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হচ্ছে জি-নাইন জাতের কলা। এটি উচ্চ ফলনশীল কলার জাত। যার প্রতিটি কাঁদিতে কলা ধরবে প্রায় ২০০টি। অল্প জমিতেও জি-নাইন কলা চাষে বেশি ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া এক কাঁদি কলা কৃষক ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা বিক্রি করতে পারবেন। এ কলা উচ্চফলনশীল, রোগ প্রতিরোধী এবং অত্যন্ত সুস্বাদু। রোপণের ৬ মাসের মাঝেই ফলন চলে আসে। ২ বছরে ৩ বার ফলন ঘরে তুলতে পারবেন কৃষক। গাছের আকার মাঝারি সাইজ হওয়ায় ঝড় বা বাতাসে ভেঙে পড়ে না। গাছ থেকে সংগ্রহের পর এ কলা তুলনামূলক বেশিদিন টিকে থাকে। কাঁদির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সব কলার আকার একই। কলার গায়ে কোনো দাগ যাতে না পড়ে, সে জন্য ব্যাগ ব্যবহার করতে হয়।

jagonews24

আরও পড়ুন: ঈশ্বরদীর বিষমুক্ত লিচু যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত 

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পাকুন্দিয়া উপজেলার আঙ্গিয়াদী ব্লকের আদিত্যপাশা বাগানবাড়ি এলাকার কৃষক আলাউদ্দিনকে উচ্চ ফলনশীল জি-নাইন জাতের কলা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। প্রথমবারের মতো তার ২০ শতক জমিতে জি-নাইন জাতের ২০০টি কলা গাছ রেফার করা হয়েছে। ২০০টি কলা গাছের চারা, সার ও কলার প্রতিটি কাঁদিতে ব্যাগ বিনা মূল্যে কৃষি বিভাগ দিয়েছে। কৃষক আলাউদ্দিন শুধু কায়িকশ্রম কাজে লাগিয়েছেন। প্রথমবারই ২০০ গাছে যে পরিমাণে ফলন হয়েছে, তাতেই দেড় লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষক আলাউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ জমিতে আগে সবজি চাষ করতাম। সবজি চাষে আমার বেশি লাভ হতো না। কৃষি অফিস থেকে আমাকে জি-নাইন কলার চারা দিয়েছে। কলা লাগানোর আট মাসেই ভালো ফলন হয়েছে। কলাটি ৮ মাসেই ফল দিয়েছে। এ কলা চাষে আমার লাভ বেশি হবে। কারণ ৪ মাস সময় কম লেগেছে। আমার ২০ শতক জমিতে কৃষি অফিসের দেওয়া ২০০ চারা রোপণ করেছি। এছাড়া সার ও ব্যাগ দিয়েছে। আমার শুধু শ্রম দিতে হয়েছে। যে ফলন হয়েছে, তাতে দেড় লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।’

jagonews24

আরও পড়ুন: পাহাড়ে গরমে কদর বেড়েছে তালের শাঁসের 

একই এলাকার কৃষক সালাহ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘অন্য বাগানের কলার চেয়ে এ বাগানের কলার ছড়া অনেক বড় হয়েছে। দেখতেও সুন্দর লাগছে। এ জাতের কলা আমার খুব পছন্দ। আমিও আগামীতে এ জাতের কলা চাষ করবো। কারণ কম সময়ে ফলন আসে। এ কলা চাষে বেশি লাভবান হওয়া যাবে।’

আঙ্গিয়াদী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিমুল হক সোহাগ জাগো নিউজকে বলেন, ‘কৃষক আলাউদ্দিনকে ২০ শতক জমির জন্য ২০০ চারা দেওয়া হয়েছে। মাত্র ৮ মাসেই ফলন হয়েছে। প্রতি কাঁদি কলা বর্তমান বাজার মূল্যে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি করতে পারবেন। এরই মধ্যে অনেক কৃষক জি-নাইন জাতের কলার চারা সংগ্রহ করে নিজ উদ্যোগে বাগান করছেন।’

এসকে রাসেল/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।