ক্যাপসিকাম চাষে রিপনের মাসে আয় ৫০ হাজার
শীতকালীন সবজি ক্যাপসিকাম চাষ করে সফল হয়েছেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের মো. আমীর আলীর ছেলে মো. রিপন মিয়া। ইউটিউব দেখে ক্যাপসিকাম চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে সফল হয়েছেন তিনি। অন্য ফসলের পাশাপাশি ক্যাপসিকাম চাষ করে এখন তার মাসে আয় ৫০ হাজার টাকা। কম সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় এ সবজি চাষে চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে। তবে সরকারিভাবে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ না থাকায় বিপ্লব ঘটাতে পারছেন না তারা।
মো. রিপন মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি জীবিকার তাগিদে প্রবাসে ছিলেন। প্রবাস জীবন ছেড়ে গ্রামে এসে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য কৃষিকাজে ঝুঁকে পড়েন। নিজের জমি তেমন না থাকায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন ক্যাপসিকাম চাষ। প্রথম বছরে ১ বিঘা জমিতে চাষ করে লাভবান হন। পরের বছর দুই বিঘা জমিতে চাষ শুরু করে এখন ৪ বিঘা জমিতে চাষ করছেন। তার লাভবান হওয়ার কথা শুনে এলাকায় ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘ক্যাপসিকাম সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। ইউটিউব দেখে বাস্তবে এ চাষ করার উদ্যোগ নিই।শসা, ফুলকপি চাষের পাশাপাশি শীতকালীন সবজি ক্যাপসিকাম চাষ করে ভালো আয় হচ্ছে। ১ বিঘা জমিতে ৫০ গ্রাম ক্যাপসিকাম বীজের প্রয়োজন হয়। বীজের দাম ১৩ হাজার টাকা। কোকোপিট দিয়ে চারা উৎপাদন করতে হয় বলে খরচ একটু বেশি।’
রিপন মিয়া বলেন, ‘এ বছর সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় বিঘাপ্রতি ১ লাখ টাকা খরচ পড়েছে। এ পর্যন্ত ৪ বিঘা জমি থেকে ৩ লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করেছি। এখনও জমিতে প্রচুর ক্যাপসিকাম আছে। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় ভালো লাভ হবে। স্থানীয় বাজারে ক্যাপসিকামের চাহিদা নেই। ঢাকার কারওয়ান বাজারে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’
দিনমজুর ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘রিপন ভাইয়ের ক্যাপসিকাম চাষ দেখাশোনা করি। আমার মতো ৪ জন এখানে কাজ করে সংসার চালান। ক্যাপসিকাম চাষে পরিশ্রম কম, লাভ বেশি। জমিতে ইন্দিরা ও টাইগার নামে দুই ধরনের ক্যাপসিকাম আছে। ক্যাপসিকাম চাষ দেখতে এখানে অনেক মানুষ আসে।’
ক্যাপসিকাম চাষ দেখতে আসা কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘গত দুই বছর বছর ধরে দেখেছি রিপন ভাই ক্যাপসিক্যাম চাষ করে লাখ লাখ টাকা লাভ করেছেন। আশা করছি আগামীতে আমিও ক্যাপসিক্যাম চাষ শুরু করবো।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, ‘নাগেশ্বরী উপজেলায় রিপন মিয়া ৪ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করছেন। গত দুই বছর ধরে শুধু তিনিই চাষ করছেন। কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ ও ন্যায্যমূল্যে সার পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কৃষিঋণ, বীজ ও প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।’
ফজলুল করিম ফারাজী/এসইউ/জিকেএস