লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকছেন গাইবান্ধার কৃষকরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ১২:৪০ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

চলতি বছর আলু চাষে ঝুঁকেছেন গাইবান্ধার কৃষকরা। যতদূর চোখ যায় বিস্তীর্ণ আলুর ক্ষেত। আলু নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। তাই লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকছেন। নতুন আলুর প্রত্যাশিত দাম পাওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী কৃষকরা।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর ১০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উফশী জাতের আলুর চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৫১০ হেক্টর ও দেশি জাতের আলু ৭৫০ হেক্টরসহ ৮ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯.৮১ মেট্রিকটন। আগামী মাসের মধ্যে আলু চাষের এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের কৃষক সাদেক আলী (৬০)। গত বছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। এ বছর ২ বিঘা বাড়িয়ে ৬ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।

লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকছেন গাইবান্ধার কৃষকরা

প্রত্যাশিত দাম পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘আবাদ তো খুব যত্ন করে করতেছি। টাকা তো অনেক খরচ হয়েছে। দামও এবার ভালো হবে। লাভও ভালোই হবে আশা করতেছি।’

একই গ্রামের কৃষক বসন্ত বিশ্বাস (৬২)। এ বছর তিনি ১২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করবেন। এরইমধ্যে সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। উফশী জাতের আলুতে শতকে চার থেকে সাড়ে চার মণ ফলন আসে। দেশি জাতের আলুতে আড়াই থেকে তিন মণ ফলন পাওয়া যায়।

লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকছেন গাইবান্ধার কৃষকরা

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আলুর যদি বাজার ভালো পাই, তাহলে ভালোই লাভ হবে। যদিও সব জিনিসের দাম বেশি। সে হিসেবেও আমরা এবার আশা করছি আলুর ভালো দাম পাবো। সেই আশায় সব কিছু ত্যাগ করে আমরা আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছি।’

সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের পূর্ব ফরিদপুর গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রায় সবাই আলু চাষ করেন। ফলন ভালো হয়, দামও ভালো পাই। এ এলাকার আলু দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। আলুর ফলনও ভালো হবে। তবে লাভ কেমন হবে, তা দমের ওপর নির্ভর করবে।’

লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকছেন গাইবান্ধার কৃষকরা

সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের কাটিহারা গ্রামের কৃষক মজনু মিয়া বলেন, ‘আলুর আবাদ করতে খুব বেশি সময় লাগে না। আমন শেষে ও ইরি মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে আলু চাষ করা হয়। এ আলু তুলে আবার ইরি ধান চাষ করবো। আলুর ফলন খুব ভালো হয়। তাই আমরা আলু চাষ করি। আশা করছি এবার আলুর ফলনও ভালো হবে। আমরা দামও ভালো পাবো।’

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বেলাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আলুর আবাদ গত বছরের তুলনায় বেশি চাষ হবে। এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলুতে পচন বা পোকার আক্রমণ ঠেকানোর পদ্ধতি কৃষকদের জানানো হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বছর আলুর বাম্পার ফলন হবে।’

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।