ফরিদপুরে ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষে রন্টির সাফল্য
ফরিদপুরে ওষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষ করে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হাসিবুল হাসান রন্টি সফল হয়েছেন। প্রায় দুই বিঘা জমিতে এ ধানের চাষ করেছেন তিনি। এতে বাম্পার ফলন হয়েছে। ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নে হাসিবুল হাসান রন্টির ধান ক্ষেত। তার বাড়ি ফরিদপুর শহরের আলীপুর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ব্ল্যাক রাইস ধানের বীজ সংগ্রহ করেছেন তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় দুই বিঘা জমিতে প্রায় ৫৫-৬০ মণ ধানের ফলন হবে। কৃষকদের হাতে ব্ল্যাক রাইস পৌঁছে দিতে বীজ হিসেবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে বলে জানিয়েছে ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হাসিবুল হাসান রন্টি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ইউটিউবে প্রথম এ ধানের চাষাবাদের বিষয়ে দেখেন ও বিস্তারিত জানেন। পরে অনলাইনে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার বীজ সংগ্রহ করেন। প্রায় ২ হাজার টাকা কেজি দরে ২ কেজি ব্ল্যাক রাইস ও ২ কেজি গোল্ডেন ব্ল্যাক রাইসের বীজ সংগ্রহ করেন। ব্ল্যাক রাইসের চাল একটু মোটা ও গোল্ডেন ব্ল্যাক রাইসের চাল চিকন। ৭৫ দিন হলো ধান লাগিয়েছি। আর দুই সপ্তহের মধ্যে ধান কাটতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব সময় পর্যবেক্ষণ ও সহায়তা করছে। তারা আমার এ ধানকে বীজ হিসেবে সংগ্রহ করবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়াও অন্য কৃষকের কাছ থেকেও প্রচুর সাড়া পেয়েছি। এরই মধ্যে আমার কাছে ১ হাজার টাকা কেজি দরে ধান বীজ হিসেবে নেওয়ার জন্য কয়েকজন অর্ডার করে রেখেছেন। ধান চাষের পাশাপাশি সৌদি আরবের খেজুর বাগান, মাল্টার বাগান করেছি। আমার একটি গরুর ফার্ম আছে। সেখানেও আমি সফলতার মুখ দেখেছি।’
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ব্ল্যাক রাইস পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও বাজারে দাম বেশি হওয়ায় দিন দিন আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন চাষিরা। যা ‘কালো ধান’ নামে পরিচিত। এক সময় চীনের রাজা-বাদশাহদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কালো ধান চাষ হতো। তবে এ ধান প্রজাদের জন্য ছিল নিষিদ্ধ।
ওষধি গুণাগুণের কারণে এ ধান চাষে ইচ্ছা জাগে হাসিবুল হাসান রন্টির। এ ধান এখানে নতুন। এ ধান চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। রন্টির এ ধানকে বীজ হিসেবে গ্রহণ করে এ অঞ্চল ও আশেপাশের অঞ্চলের কৃষককে সরবরাহ করা হবে। ফলে কৃষক কম দামে এ ধান সংগ্রহ করতে পারবেন। এ ধানের চালের ভাত খেলে অনেক রোগ কমে যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জিয়াউল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাধারণ ধানের চেয়ে কালো ধানের দাম ও চাহিদা অনেক বেশি। কালো ধানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে রাখে সুস্থ। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধক এ ধানের চাল।’
তিনি আরও বলেন, ‘গোল্ডেন ব্ল্যাক রাইস ধানগাছগুলো বেশ সুন্দর এবং অন্যান্য ধানগাছের মতোই সবুজ। শুধু ধানগুলো কালো। আর এ কালো ধান থেকেই বের হবে কালো রঙের চাল। ব্ল্যাক রাইস ধানের গাছও কালো। ধানের বাইলগুলোও কালো। চালও কালো।’
এন কে বি নয়ন/এসইউ/এএসএম