পাহাড়ে বাড়ছে মাল্টা চাষ, আসছে নতুন মাল্টা
পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির আবহাওয়া মাল্টা চাষের জন্য অনুকূলে। এমনকি ভালো ফলন হওয়ায় প্রতিনিয়ত মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকছে পাহাড়ের চাষিরা। রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলা আনারসের রাজধানী বলে খ্যাত হলেও এখন এ উপজেলার মানুষ মাল্টা চাষেও বেশ উৎসাহী।
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি অর্থবছরে ১৭ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি ৫ টন করে।
উপজেলার দুটি সাপ্তাহিক বাজার নানিয়ারচর সদর ও ঘিলাছড়ি ঘুরে দেখা যায়, রসালো মাল্টা বিক্রি করতে দূরদূরান্ত থেকে চাষিরা বাজারে এসেছেন। যার প্রতিকেজি মাল্টার দাম মাত্র ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সুস্বাদু রসালো মাল্টাগুলো চাষিদের কাছ থেকে কম দামে ব্যবসায়ীরা কিনে চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান।
নানিয়ারচর বাজারে দেখা হয় মাল্টা চাষি ধনপতি চাকমার সঙ্গে। তার আনারসের বাগান থাকলেও পাশেই ১ একর জমিতে মাল্টা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার আনারসের বাগান আছে। আমি প্রতিবছর ভালো ফল পাচ্ছি। কিন্তু চিন্তা করলাম ১ একর জমিতে মাল্টা চাষ করে দেখি। এখন দেখছি বেশ ভালো ফল হচ্ছে। জুম চাষ কিংবা অন্য ফসলের চেয়ে মাল্টাই বেশি লাভজনক।’
আরেক চাষি হেমেলিন্দু চাকমা বলেন, ‘আমি কলা বাগানের মাঝে মাঝে মাল্টার চারা রোপণ করেছি। এবার আমি ৪ ঝুড়ি মাল্টা পেয়েছি, যার ওজন প্রায় ৮০০ কেজি হবে। ৫ হাজার টাকায় সব বিক্রি করতে পারব বলে আমি আশাবাদী।’
নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মেজবাহ্ উদ্দিন বলেন, ‘অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মাল্টা পূর্ণতা পায়। মৌসুমের পরে বা আগে ছেড়া হলে মাল্টার পূর্ণতা আসবে না এবং রস কম হবে। মাল্টা এ সময়ে সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। তবে হলুদ বর্ণের করতে হলে কিছু প্যাকিং ব্যবস্থা নিতে হবে। পাহাড়ের কৃষকদের জন্য সে খরচ সম্ভব হয় না। বিধায় তারা সবুজ বর্ণের মাল্টা বিক্রি করে থাকে। নানিয়ারচরে পর্যায়ক্রমে মাল্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।’
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাল্টা চাষে তেমন বাড়তি খরচ না হওয়ায় সহজেই কৃষকরা চাষে লাভবান হতে পারেন। এ উপজেলার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী। নানিয়ারচর উপজেলা আনারস চাষের পাশাপাশি মাল্টা চাষেও বিশাল অবদান রাখতে পারবে।’
সাইফুল উদ্দীন/এসইউ/জিকেএস