৬০ হাজার টাকার মাছ চাষে কোটিপতি ওসমান

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০১:৫১ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

ময়মনসিংহের ত্রিশালের মো. ওসমান গনি মিয়া মাত্র ৬০ হাজার টাকা নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। তিনি ২০১১ সালে মাছ চাষ শুরু করে ১১ বছরেই কোটিপতি হয়েছেন। মাছ চাষে আসার বড় অনুপ্রেরণা তার মা। তাই মাছের খামারের নাম দিয়েছেন ‘মা মৎস্য খামার’। ওসমান গনির ৪২ বিঘা আয়তনের পুকুর থেকে প্রতি বছর ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়।

মাছ চাষের পাশাপাশি মো. ওসমান গনি মিয়া ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ১০ নং মঠবাড়ি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ওসমান গনি জানান, প্রতি বছর মাছ ও ডেইরি ফার্মে ৬০-৭০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। বছর শেষে অর্ধকোটি টাকারও বেশি লাভ হয়।

তরুণ এই উদ্যোক্তা ২০১১ সালে মৎস্য চাষ শুরু করলেও ২০১৬ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে ক্যাটফিশ চাষ শুরু করেন। ৪২ বিঘা পুকুরে তিনি পাবদা, টেংরা, গুলশা, বাইম, বড় বাংলা, পাঙ্গাশসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করেন। বর্তমানে তার খামারে আট লাখ পাবদা, আড়াই লাখ টেংরা, দেড় লাখ পাঙ্গাশ, পঞ্চাশ হাজার গুলশা, ১৫ হাজার বাইম, ২০ হাজার ছোট বাংলা এবং ৭ হাজার বড় বাংলা আছে।

মাছ চাষের পাশাপাশি তার ডেইরি ফার্মও রয়েছে। সেখানে ৬টি গাভী, ২টি বকনা ও ২টি ষাঁড় আছে। তিনি এবং তার দুই ভাই ও দুই কর্মচারী খামার দেখাশোনা করেন। কর্মচারীদের মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতন দেন। এছাড়াও নিজে উদ্যোক্তা হওয়ার পাশাপাশি ৪০ জন শিক্ষিত যুবককেও তিনি উদ্যোক্তা হতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। যেকোনো সমস্যায় নবীন উদ্যোক্তাদের তিনি পরামর্শ দেন।

ওসমান গণির মা মোছা. মুর্শিদা খাতুন বলেন, আমাদের ১৫ সদস্যের যৌথ পরিবার। ২০১২ সালে ওদের বাবা মারা যাওয়ার পর ওসমান গণিই পরিবারের হাল ধরেছে। ওর বাবার দেওয়া ৬০ হাজার টাকা থেকে মৎস্য চাষ শুরু করে আজ দেড় কোটি টাকার ব্যবসা গড়ে উঠেছে। ওরা তিন ভাই পরিশ্রম করে আজকের এই অবস্থান তৈরি করেছে। তাদের সফলতা দেখে আমি অত্যন্ত খুশি।

ওসমান গণি বলেন, অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসেছি। পড়ালেখা শেষ করে অনেকে বেকার বসে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করেও চাকুরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে আমি বলতে চাই শিক্ষিত বেকার না হয়ে শিক্ষিত উদ্যোক্তা হন। নিজের পাশাপাশি অন্যদেরও জীবিকার ব্যবস্থা করুন।

আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য শিক্ষিত উদ্যোক্তা হওয়া প্রয়োজন। পুকুরের পিএইচ শনাক্তকরণসহ নানাবিধ কাজে শিক্ষিতদের গুরুত্ব অপরিসীম। আমার মতো যারা তরুণ উদ্যোক্তা আছে তাদের উদ্দেশ্যে বলব, ব্যবসায় লাভ-লোকশান থাকবেই। নিজের সেরাটা দিয়ে কাজ করতে হবে,পরিশ্রম করতে হবে। তাহলে সফলতা আসবেই।

এমএমএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।