কৃষিক্ষেত্রে অবদানে ১৩ ব্যক্তি এআইপি কার্ড পাবেন বুধবার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২২

কৃষিক্ষেত্রে অবদানে প্রথমবারের মতো চারটি ক্যাটাগরিতে ১৩ জনকে ২০২০ সালের জন্য ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এগ্রিকালচারাল ইম্পর্ট্যান্ট পারসন- এআইপি)’ কার্ড দেবে কৃষি মন্ত্রণালয়।

সিআইপির (বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) মতো কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মানিত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সচিবালয়ে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা প্রদান উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘কৃষি উদ্ভাবন জাত/প্রযুক্তি’ ক্যাটাগরিতে ৪ জন, ‘কৃষি উৎপাদন/বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প’ ক্যাটাগরিতে ৬ জন, ‘স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক রেজিস্ট্রিকৃত কৃষি ফসল/মৎস্য/প্রাণিসম্পদ/বনজসম্পদ উপখাতভুক্ত সংগঠন’ ক্যাটাগরিতে একজন এবং ‘বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত’ ক্যাটাগরিতে দুজন এআইপি নির্বাচিত হয়েছেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বুধবার সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২০ সালের এআইপি পুরস্কার দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতোই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি ও কৃষকবান্ধব। কৃষকের প্রতি তার রয়েছে পরম রদ ও মমতা। কৃষিকাজ করে কৃষক লাভবান হোক, কৃষকের জীবনমানের উন্নয়ন হোক, উন্নত সমৃদ্ধ জীবন পাক-এই লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তাই, তিনি কৃষিকে লাভজনক ও আধুনিক করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

‘এরই ধারাবাহিকতায়, কৃষির সাফল্যের অন্যতম কারিগর কৃষক, কৃষি বিজ্ঞানী, কৃষিবিদ, রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা, উৎপাদনকারী খামারি, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী ও কৃষি সংগঠকদের প্রতি বছর সম্মাননা জানাতে ও তাদেরকে উৎসাহিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার সরকার কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মাননা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগামী দিনের কৃষিকে আমরা বাণিজ্যিক ও সম্মানজনক পেশাতে উন্নীত করতে চাই। কৃষিতে শিক্ষিত, মেধাবী তরুণদের আকৃষ্ট করতে চাই। সেজন্য, কৃষক, কৃষিবিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উৎপাদনকারী, বাণিজ্যিক কৃষিখামার স্থাপনকারী, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী ও কৃষি সংগঠকদের উৎসাহ ও সম্মান জানাতে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব স্বীকৃতির মাধ্যমে টেকসই কৃষির উন্নয়নে কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

যারা পাচ্ছেন সম্মাননা

‘কৃষি উদ্ভাবন জাত/প্রযুক্তি’ ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব জেনেটিক্স অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিং-এর অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, দিনাজপুর বীরগঞ্জের এ আর মালিক সিডস প্রাইভেট লিমিটেডের (গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রে) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউস সোপান মালিক, বাগেরহাটের ফিউচার অর্গানিক ফার্মের সৈয়দ আব্দুল মতিন এবং সিলেটের আলিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের আলিমুছ ছাদাত চৌধুরী।

‘কৃষি উৎপাদন/বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প’ ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন- নাটোরের দৃষ্টান্ত এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড নার্সারির মো. সেলিম রেজা, ঠাকুরগাঁওয়ের মো. মেহেদী আহসান উল্লাহ চৌধুরী, ঝালকাঠির এশা এন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচারাল ফার্মের মো. মাহফুজুর রহমান, পিরোজপুরের জাগো কেঁচো সার উৎপাদন খামারের মালিক মো. বদরুল হায়দার বেপারী, পটুয়াখালীর বাউফলের নুর জাহান গার্ডেনের মো. শাহবাজ হোসেন খান, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট রেলস্টেশন সংলগ্ন বিছমিল্লাহ মৎস্য বীজ উৎপাদন কেন্দ্র ও খামারের মো. শামছুদ্দিন (কালু)।

নওগাঁয়ের শাহ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘর স্থাপনকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম শাহ ‘স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক রেজিস্ট্রিকৃত কৃষি ফসল/ মৎস্য/প্রাণিসম্পদ বনজসম্পদ উপখাতভুক্ত সংগঠন’ ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন।

‘বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত’ ক্যাটাগরিতে এআইপি হচ্ছেন পাবনা ঈশ্বরদীর জয়নগরের নুরুন্নাহার কৃষি খামারের মোছা. নুরুন্নাহার বেগম এবং পাবনার ঈশ্বরদীর মা-মণি কৃষি খামারের মো. শাজাহান আলী বাদশা।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নীতিমালা, ২০১৯’ অনুযায়ী, মনোনীতরা এআইপি কার্ডের সঙ্গে মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রশংসাপত্র পাবেন। এআইপির মেয়াদ হবে এক বছর। এআইপিরা সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশ পাস পাবেন। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান ও সিটি/মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে ভ্রমণকালীন সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে আসন সংরক্ষণ অগ্রাধিকার পাবেন।

একজন এআইপির ব্যবসা বা দাপ্তরিক কাজে বিদেশে ভ্রমণের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসা পেতে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে উদ্দেশ্য করে লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন ইস্যু করবে। একজন এআইপি তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, মাতা, পিতা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন এবং বিমান বন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন বলেও জানান আব্দুর রাজ্জাক।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সালের সম্মাননা এখন দিতে হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের এআইপি নির্বাচনের কাজ চলমান রয়েছে। এখন থেকে নিয়মিত এ সম্মাননা দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/এমআরএম/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।