মৌসুম ছাড়া মাচায় তরমুজ চাষে সফল হয়েছেন তারা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০১:০০ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০২১

মাচায় তরমুজ চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন উপকূলীয় বরগুনার কৃষক আবদুল মান্নান। অসময়ে তরমুজ চাষ করে দ্বিগুণ লাভের কথা ভাবছেন তিনি। তার মাচায় এমন তরমুজ চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এটি চাষের পরিকল্পনা নিয়েছেন।

জানা যায়, বরগুনার সদর উপজেলার কালির তবক গ্রামের কৃষক আবদুল মান্নানের ছোট ছেলে বনি আমিন অনেক বছর ধরেই তরমুজ পরিবহন শ্রমিক হিসাবে কাজ করছেন। টেলিভিশনে মাচায় তরমুজ চাষের প্রতিবেদন দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে এটি চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

jagonews24

এরপর তার বাবা আবদুল মান্নান ও বড় ভাই আবদুল আলীমের সাথে কথা বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শ নিয়ে অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষ শুরু করেন তারা। খামারটি প্রতিষ্ঠার পেছনে আবদুল মান্নানের স্ত্রী রোফেজা বেগমও দিন-রাত পরিশ্রম করেন। তাদের এ তরমুজ চাষ অসময়ে হলেও প্রথমবারেই সাবইকে চমকে দেন তারা।

সাধারণত শীতকালে বরগুনার বিভিন্ন এলাকার জমিতে তরমুজের চারা রোপণ করা হয় এবং তা বিক্রি করা হয় গ্রীষ্মকালে। কিন্তু কালিরতক গ্রামের আবদুল মান্নান চলতি বছরে এপ্রিল থেকে শুরু করে জুন অর্থাৎ বর্ষাকালে ৮০ শতাংশ জমিতে সরাসরি বেঙ্গল টাইগার, কারিশমা ও কানিয়া জাতের তরমুজের বীজ বপন করেন।

jagonews24

বৃষ্টির পানিতে বীজ যেন পচে নষ্ট না হয় সেজন্য উন্নতমানের পলিথিন ব্যবহার করেন। যার ফলে অল্প সময়ের মধ্যে বীজ অঙ্কুরোদগম হয়ে চারা বেরিয়ে আসে। বর্তমানে মাচায় এখন অনেক তরমুজ ঝুলছে। প্রতিটি তরমুজ ৫-৬ কেজি ওজনের। লাল ও হলুদ বর্ণের এ তরমুজগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও অনেক সুস্বাদু।

তরমুজ চাষি আবদুল মান্নান জানান, অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষের কথা শুনে অনেকেই পাগলামি বলে ভেবেছিল। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের বললে তারা সঠিক পরামর্শ দেন। পরে তাদের দেখানো পদ্ধতি প্রয়োগ করে জমিতে বীজ বপন ও পরিচর্যা করে আমরা সফল হই।

jagonews24

মাচায় তরমুজ চাষ করে আবদুল মান্নানের সফলতা দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে দূর থেকে প্রতিদিন মানুষ তরমুজ ক্ষেত দেখতে আসেন। স্থানীয় চাষি বাবুল সিকদার, ছিদ্দিক মেম্বার, মো. নিজাম ও নজরুলসহ অনেকে মাচায় তরমুজ চাষ করার কথা ভাবছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মাচায় তরমুজ চাষে উৎপাদন খরচ খুব একটা বেশি না। তবে নিয়মিত ক্ষেতের যত্ন নিতে হয়। নতুন এই পদ্ধতি সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া গেলে একদিনে যেমন, তরমুজ সারাবছর পাওয়া যাবে অন্যদিকে চাষিরা লাভবান হবেন।

jagonews24

অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষের কথা শুনে বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান স্ত্রীকে নিয়ে খামারটি পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি এ উদ্যোগকে অনুপ্রাণিত করার জন্য কয়েকটি তরমুজও কিনে নেন। জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, এখানে যে নতুন উদ্যোগে নতুন প্রযুক্তিতে অসময়ে তরমুজ চাষ ও অন্যান্য কৃষি কাজ শুরু হয়েছে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। এভাবেই বাংলাদেশের কৃষি এগিয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের কৃষক স্বাবলম্বী হচ্ছে।

এমএমএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।