ভালো ফলনেও হতাশ দিনাজপুরের পানিকচু চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০২:৩২ পিএম, ০৫ জুলাই ২০২১

দিনাজপুরের খানসামায় প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়া থেকে এনে চাষকৃত হাইব্রিড এন কে-ওয়ান জাতের পানিকচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে আর্থিক উন্নতির অপার সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখেছেন ছিট আলোকডিহি গ্রামের চেয়ারম্যানপাড়ার কৃষক আলমগীর হোসেন।

কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আর লকডাউনের কারণে বর্তমানে পানিকচু বিক্রি ও রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সম্ভাবনার স্থলে কচুতে হতাশা দেখছেন তিনি।

উপজেলা ঘুরে জানা গেছে, খানসামায় পানিকচু চাষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আলোকঝাড়ী, বাসুলী, জয়গঞ্জ, গুলিয়াড়া, আঙ্গারপাড়া ও ভেড়ভেড়ী গ্রামের কচু চাষিরা।

jagonews24

প্রায় চার যুগের বেশি সময় ধরে তারা স্থানীয় জাতের পানিকচু ও মুখিকচু চাষ করে আসছেন। এদের অনেকে পরিবারের সবজির চাহিদা মিটিয়ে কচু বিক্রি করে স্বল্প সময়ে ভাগ্য বদল করেছেন।

এবারও ৩৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের পানিকচু, লতিরাজ ও মুখি কচুর চাষ করছে উপজেলার চাষিরা। তবে স্থানীয় পানিকচুর বদলে কৃষক আলমগীর হোসেন এ বছর কোরিয়ান এন কে-ওয়ান জাতের কচুর চারা সংগ্রহ করে চাষ করছেন।

কৃষক আলমগীর হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি পার্শ্ববর্তী উত্তরা ইপিজেড-এ একটি কোম্পানিতে কাজ করি। সেখানকার একজন কর্মকর্তা উত্তর কোরিয়া যাতায়াত করেন। আমি তার মাধ্যমে কোরিয়া থেকে উন্নত জাতের এ কচুর চারা সংগ্রহ করে চাষ করছি। আমাকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন উপসহকারী কৃষি অফিসার এম জে এইচ কামরুজ্জামান।

৩৩ শতক জমিতে ২ হাজার ৮শ চারা ক্রয় ৩০ হাজার টাকা, হাল-চাষ, জমি তৈরি, সার প্রয়োগ ও অন্যান্য খরচ আরও হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। নভেম্বর মাসে লাগানো এসব পানিকচু বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে। প্রতিটি কচু উচ্চতা হয়েছে ১০ থেকে ১২ ফুট আর ওজন হয়েছে ১৫ থেকে ২০ কেজি করে। একটি পরিপূর্ণ কচুর ওজন হয় ৩৫ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত।

jagonews24

এসব কচুর কাণ্ড, লতি আর শুকনো ডাটা উত্তর কোরিয়াতে রপ্তানি করার কথা রয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে রপ্তানিতে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত চারা বিক্রি হয়েছে ৪০ হাজার টাকা, কচুর লতি ৩৮ হাজার টাকা এবং ফুল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার টাকা। স্থানীয় ব্যবসায়িরা প্রতিটি কচু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে দাম বলেছে বলে তিনি জানান।

কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় জানান, কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ, বি, সি, প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ক্যালশিয়াম ও আয়রন রয়েছে। স্থানীয় জাতের চেয়ে হাইব্রিড জাতের পানিকচুর ফলন ভালো হয়। আলমগীর হোসেনের ক্ষেতে পানিকচুর ফলন ভালো হয়েছে।

এ জাতের কচুর প্রতিটি কাণ্ডের ওজন হয় ৩৫ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে অন্যান্য চাষির মাঝে চারা সরবরাহ করেছি। এছাড়া পার্শ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দেবীগঞ্জ ও বদরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় চারা বিক্রি হয়েছে। আশা রাখি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি উৎপাদিত কচু বাজারজাত করতে পারবেন এবং লাভবান হবেন।

এমদাদুল হক মিলন/এমএমএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।