পেঁয়াজের ফুল শুকিয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ফরিদপুরের চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০১:১৭ পিএম, ১২ মার্চ ২০২১

দেশের কালো স্বর্ণ খ্যাত পেঁয়াজবীজ চাষের জন্য বিখ্যাত ফরিদপুর। অন্য বছরের চেয়েও এবার বেশি হারে এ জেলাজুড়ে পেঁয়াজের বীজ চাষ হচ্ছে। চাষের শুরু থেকে মাঝ অবদি খেতের অবস্থাও বেশ ভালোই ছিলো। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে বীজ চাষিদের কপালজুড়ে যেন চিন্তারভাঁজ।

কদম ফোটার পর ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে করে দেখা দিয়েছে ফলন হ্রাসের শঙ্কা। ফুল ফোটার পর কিছু ফুল পরিপুষ্ট না হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে বলে অনেক চাষিরা জানান।

এদিকে ফুল শুকানো বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া গেছে।

গত বুধবার (১০ মার্চ) ফরিদপুরের সদর এলাকায় পেয়াজ বীজ চাষ পরিদর্শন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।

জেলার সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের চাষি মো. ফারুক মুন্সি বলেন, আমি এবার বছর এক বিঘার বেশি জমিতে পেঁয়াজবীজ চাষ করছি। শুরু থেকে এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে অবস্থা বেশ ভালো ছিলো, কিন্তু হঠাৎ করে ফুল শুকিয়ে যাওয়ায় ফলন কমার শঙ্কা করছি। যদিও সব জায়গার অবস্থা একরকম নয় দাবি করে গোপালপুর ও অম্বিকাপুর ইউনিয়নে একাধিক পেঁয়াজবীজ চাষীরা এমন শঙ্কার কথা জানান।

গোপালপুর ব্লকের চাষি মো. মোস্তফা শেখ, মুন্নাফ শেখ, আজিজুল শেখ জানান, প্রথমদিকে আমাদের কাছেও মনে হচ্ছিল যে এবার খেত খুব ভালো হচ্ছে,ভাল ফলন হবে। কিন্তু কদম ফোটার পর ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমনিতেই পেঁয়াজ দানাবীজ চাষে প্রচুর খরচ, ফুল শুকিয়ে যদি ফলন ব্যহত হয় তাহলে ক্ষতির মুখে পরতে হবে আমাদের।

মূলত পরাগায়নের অভাবে এই সমস্যা উল্লেখ করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস শেখ বলেন, পেঁয়াজবীজ ফুল শুকিয়ে যাওয়া একটি গুরুতর সমস্যা, এতে ফলনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

এ বিষয়টি নিয়ে আরেক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আফতাব আলি মোল্লা বলেন, মাঠে এখন প্রচুর কালোজিরা ও ধনিয়া ফুল ফুটেছে। মৌমাছির কাছে কালোজিড়া ও ধনিয়া ফুল বেশি পছন্দ। সব মৌমাছিরা এখন কালোজিরা ও ধনিয়া খেতে। তবে কালোজিড়া ও ধনিয়া ফুল শেষ হয়ে গেলে মৌমাছি আবার পেঁয়াজবীজ ফুলে ফিরে আসবে, তখন পরাগায়ন বাড়বে এবং পেঁয়াজ ফুলের এ সমস্যা কেটে যাবে।

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন এ বিষয়ে বলেন ভিন্ন কথা। অতিরিক্ত রাসয়নিক বালাইনাশক ব্যবহারের ফলে এমনটা হতে পারে। তিনি আরো বলেন, গত সোমবার (৮ মার্চ) আমরা অম্বিকাপুর ব্লকের বেশ কিছু খেত পরিদর্শন করেছি, তখন এমন সমস্যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। তবুও আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. হযরত আলী বলেন, আমি নিজে কিছু পেঁয়াজবীজ খেত পরিদর্শন করেছি। বেশিরভাগ খেতের মাটিতে রস নেই, গাছে পাতা নেই। যে কারণে ফুল প্রয়োজনীয় খাদ্য পাচ্ছে না, এসব কারণে ফুল শুকিয়ে যেতে পারে। আবার গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, এটাও একটা কারণ হতে পারে। তবে সমস্য যাই হোক আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এমএমএফ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।