সবুজের বুকে সূর্যমুখীর হলুদ হাসি
চারপাশে বাড়ি। মাঝখানে ২৬ শতাংশ জমির মধ্যে সূর্যমুখী ফুলের হাসি। সবুজ ফসলের মাঝে হলুদের হাসি আকৃষ্ট করছে সাধারণ মানুষকে। সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ছে, তখন মৃদু রোদে দূর থেকে মনে হয় এ যেন এক সুর্যের মেলা।
ফুটন্ত সেই সূর্যমুখীগুলো তাকিয়ে আছে সূর্যের দিকে। আর এমন এক বৈচিত্র্য দেখতে প্রতিদিন আশপাশের এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করতে ও দেখতে ছুটে যাচ্ছেন সূর্যমুখী হলুদ ছড়ানো ওই জমিতে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌরসভার পোষ্টকামুরী গ্রামে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ সবুজ ফসলি মাঠের সূর্যমুখী জমিনে এভাবেই ছুটে আসছেন। পোষ্টকামুরী গ্রামের বাসিন্দা মির্জাপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আবুল কাশেম কাচ্ছেদের ছেলে মির্জাপুর পৌরসভার দুইবারের সাবেক কাউন্সিলর এস এম রাশেদ বাড়ির পাশে এই সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন। মির্জাপুর উপজেলায় এ বছর ৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছেন।
সম্প্রতি সূর্যমুখী ফলানো জমিতে গিয়ে দেখা গেছে কয়েকজন মুঠোফোনে ছবি তুলছেন। এ সময় কথা হয় নিপা আক্তার ও আলাউদ্দিন নামে দুইজনের সঙ্গে। তারা জানান, ফেসবুকে ছবি দেখে পৃথকভাবে সহপাঠীদের নিয়ে ছবি তুলতে এসেছেন। সত্যি অপরূপ দৃশ্য। কেউ না দেখলে বিশ্বাস করার মতো না। সূর্যমুখী ফসল পৌরসভা এলাকায় এই প্রথম। এবার এখানে সূর্যমুখী চাষ হওয়ায় দেখতে ও ছবি তুলতে এসেছি।
জমির পাশের বাড়ির বাসিন্দা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. ওয়াজেদ মিয়া জানান, প্রতিদিন শত শত মানুষ এখানে আসছেন এবং বিভিন্নভাবে ছবি তুলছেন। বিষয়টি আমার খুব ভালো লাগছে।
সূর্যমুখী চাষের কৃষক মির্জাপুর পৌরসভার দুইবারের সাবেক কাউন্সিলর এস এম রাশেদ জানান, বাড়ির পাশে প্রায় দুই শতক জমিতে ফলের বাগান করেছিলাম। গত বর্ষায় পানিতে তলিয়ে তা মরে গেছে। এতে তার প্রায় পাঁচ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার প্রথম আমি ২৬ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে শুধু বীজ দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই জমিতে আমার প্রায় ১৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম জানান, সূর্যমুখী দেখতে রূপময় নয়, গুণেও অনন্য। সূর্যমুখী বীজের তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
পোষ্টকামুরী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুন চন্দ্র খা বলেন, এবার আমার ব্লকে সাবেক কাউন্সিলর এস এম রাশেদ ২৬ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। মার্চ মাসের মাঝামাঝি ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান জানান, মির্জাপুরে এ বছর ৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী আবাদ হয়েছে। সূর্যমুখী বিস্তার ও জনপ্রিয়তার উদ্দেশ্যে স্থানীয় কৃষি বিভাগ নানাভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এমএমএফ/এমকেএইচ