সুলভে তাজা ফল-শাকসবজি নিশ্চিতে নগর কৃষি নীতিমালার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৪ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২১

প্রতিবছর পর্যাপ্ত পরিমাণ সবজি ও ফল-গ্রহণ করানো সম্ভব হলে ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন মানুষের জীবনরক্ষা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সবজি ও ফলমূল উৎপাদনকারী দেশ হলেও এখানে জনগোষ্ঠী প্রয়োজনের তুলনায় কম তাজা ফল ও শাক-সবজি গ্রহণ করছে।

তাজা ফল ও শাক-সবজি গ্রহণের সঙ্গে প্রাপ্তি ও দামের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। নগরে তাজা ফল ও শাকসবজির যোগান নিশ্চিতে নগর কৃষি নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি।

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ‘নগরে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিতে সহায়ক নীতি গ্রহণে করণীয়’ শিরোনামে এক ওয়েবিনারে দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। আর্ক ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স (সিএলপিএ), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও মেয়র অ্যালায়েন্স ফর হেলদি সিটি’র উদ্যোগে এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও আর্ক ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক ড. রুমানা হকের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে অংশ নেন রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম, ধামরাই পৌরসভার মেয়র আলহাজ গোলাম কবির, সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুর রশিদ ডাবলু, গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএলপিএ’র সেক্রেটারি সৈয়দ মাহবুবুল আলম।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অসংক্রামক রোগ সারাবিশ্বে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বাংলাদেশেও এটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। কারণ বর্তমানে দেশে ৬৭ শতাংশ মৃত্যুর কারণ অসংক্রমণজনিত রোগ। এসডিজির লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।

অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধির প্রধান কারণ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া নগরায়ন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা; অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস; তাজা শাক-সবজি-ফলমূল কম খাওয়া; শরীরচর্চা, ব্যায়াম বা পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব; অতিরিক্ত স্থূলতা; অনিয়ন্ত্রিত মাদক-সেবন এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার এবং পরিবেশ দূষণ।

তারা আরও বলেন, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণে উৎসাহী করতে ফল, সবজি গ্রহণে উৎসাহী এবং ট্রান্সফ্যাট, অতিরিক্ত চিনি, লবণ গ্রহণে নিরুৎসাহিত করতে সচেতনতা, পুষ্টি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড প্যাকেটে যুক্ত করা, খাদ্যে লবণ গ্রহণে নিরুৎসাহিত করা, উচ্চ কর আরোপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং বিজ্ঞাপন বন্ধ করার পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণে জনগণকে উৎসাহী করতে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ এ দুটি সমান্তরালভাবে করা সম্ভব না। তবে স্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদনের জন্য ভর্তুকি ও কর হ্রাস একটি কার্যকর উপায়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যের ফুড সাপ্লাই চেইনের আইন ও সহায়ক নীতি প্রণয়ন, সংশোধন, পরিমার্জন করা না হলে জনগণের কাছে সুফল পৌঁছে দেয়া সম্ভব নয়।

নগরে ছাদ-কৃষি কৃষির জন্য নিজের কর্ম-এলাকায় গাইডলাইন প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন, ছাদ-কৃষিতে উৎসাহ দিতে নাগরিকদের প্রণোদনা প্রদান, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জায়গায় ফসল উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ, নগরের আশপাশ থেকে সহজ ও কম খরচে যেন মালামাল নিয়ে আসতে পারে সেজন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, নগরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের (হকার, ফেরিওয়ালা, কৃষক) বসার ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, জাতীয়ভাবে নগর কৃষি নীতিমালার প্রণয়নের জন্য সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করার সুপারিশ করেন বক্তারা।

ওয়েবিনারে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), এইড, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠন, ডাস, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

পিডি/এআরএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।