৩০ বছর ধরে নার্সারির আয়ে চলে সংসার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
প্রকাশিত: ০১:৫৪ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৯

পাঁচ শতাংশ জমিতে নার্সারি করে সফল হয়েছেন নিমাই চন্দ্র মহন্ত। সামান্য এ জমিতে তিনি রোপণ করেছেন বিভিন্ন ফুল ও ওষুধি গাছ। এসব গাছ তিনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন।

জানা যায়, জেলার মান্দা উপজেলা সদরের কামারকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা নিমাই চন্দ্র মহন্ত। এইচএসসি পাসের পর অর্থাভাবে আর পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি তার। এরপর একটি ওষুধ কোম্পানিতে রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে ৪ বছর চাকরি করেছেন। এরপর গ্রামে ফিরে এসে বিয়ে করে ঘর-সংসার শুরু করেন। সংসার জীবনে এক মেয়ে। মেয়ে তুলি রানী এবার এইচএসসি পাস করে রাজশাহীতে কোচিং করছেন।

nursury-in

প্রথমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাড়ির এক কোণায় ১৯৮৩ সালে একটি হাস্নাহেনা গাছ লাগান। গাছে ফুল আসার পর থেকে বেশ সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। এরপর তিনি বাড়ি লাগোয়া ৫ শতাংশ জমিতে বিভিন্ন ফুলের নার্সারি করার সিদ্ধান্ত নেন। নার্সারিতে ক্যাকটাস, অর্কিড, অ্যাডিনিয়াম, গোলাপ, অ্যালোভেরাসহ বিভিন্ন ফুল ও ওষুধি গাছ লাগান। নার্সারির নাম দেন ‘বটতলা নার্সারি’।

nursury-in

প্রতিষ্ঠানের নাম সাধারণত নিজের, বাবা, মা, স্ত্রী বা সন্তানের নামে হয়ে থাকে। কিন্তু এ নার্সারির নাম একটু ব্যতিক্রম। উপজেলার আত্রাই নদীর তীর সংলগ্ন কামারকুড়ি গ্রাম। নদীর তীরে বড় এক বটগাছ। এ বটগাছের নামে নার্সারির নাম রাখা হয়। নার্সারিতে থরে থরে সাজানো আছে বিভিন্ন ফুলের গাছ। অর্কিডের চারা প্লাস্টিকের ঝুড়িতে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ক্যাকটাসের চারা বাড়ির দেয়ালে তাক তৈরি করে এবং দ্বিতীয় তলায় ছোট ছোট টবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। নিচের জমিতে আছে গোলাপ ও অ্যালোভেরাসহ অন্যান্য গাছ। সামান্য এ জায়গাজুড়ে প্রকৃতির এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

nursury-in

নার্সারির মালিক নিমাই চন্দ্র মহন্ত জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ১৯৮৩ সাল থেকে নার্সারি ব্যবসার সাথে জড়িত। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সামান্য এ জমিতে নার্সারিটি করেছি। বিভিন্ন বই পড়ে এবং কিছু অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া কৃষি অফিস থেকেও প্রয়োজনমতো পরামর্শ নিয়ে থাকি। এসব ফুল ও ওষুধি গাছ বড় হতে একটু সময় লাগে।’

nursury-in

তিনি আরও বলেন, ‘জীবিকার তাগিদেই নার্সারিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। ফুল ও ওষুধি গাছের চারাগুলো ঢাকা, বগুড়া ও রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকি। ঢাকার ব্যবসায়ীরা অনেক সময় বাগানে এসেও কিনে নিয়ে যান। এছাড়া বিভিন্ন মেলায় ফুলের গাছ নিয়ে অংশ নেই। এখান থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসারের খরচের পাশাপাশি মেয়ের পড়াশোনার খরচ বহন করা হয়।’

আব্বাস আলী/এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।