বহু রোগের চিকিৎসায় উলটকম্বল

তারিফুল ইসলাম
তারিফুল ইসলাম তারিফুল ইসলাম , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ২৭ জুলাই ২০১৯

প্রাকৃতিকভাবেই চারপাশে অনেক দরকারি উদ্ভিদ জন্মে। তবে সবকিছু আমাদের চেনা-জানা হয় না। পথে চলতে গিয়ে অজানা কত উদ্ভিদের ফুল দেখে আমরা মুগ্ধ হই। কেননা প্রাণ ও প্রকৃতি আমাদের জীবন ধারনে দরকারি, যা আমাদের শরীরে ওষুধ হিসেবে কাজে লাগে। তেমনি ভেষজ গুণে অনন্য এক উদ্ভিদ উলটকম্বল।

উলটকম্বল দেশে জন্মানো ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম। যার ইংরেজি নাম ডেভিলস কটন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকায় উলটকম্বল গাছের বিস্তৃতি রয়েছে। এ ছাড়া এশিয়ার প্রধান অঞ্চল এর আদি নিবাস। বাংলাদেশের সব জায়গাতেই উলটকম্বল গাছ দেখা যায়। ২-৩ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট গুল্মজাতীয় চিরহরিৎ গাছ এটি।

ulot-in-(1)

এ গাছের শাখার গোড়ার পাতা হৃৎপিণ্ডের মতো দেখায়, তবে পাতার সামনের দিকটা সরু, উজ্জ্বল সবুজ রঙের। পাতার বোঁটা ও কচি ডাল খয়েরি লাল, ডগার পাতাগুলো লম্বা আকৃতির। গাছের বাকল শক্ত আঁশযুক্ত, পানিতে ভেজালেও নষ্ট হয় না। নির্দিষ্ট বয়সে এ গাছে ফুল ফোটে। ফুলের রং খয়েরি। পাপড়ি পাঁচটি, গাছের কচি শাখায় ফুল ফোটে। ফুল দেখতে বেশ মনোরম।

গ্রীষ্ম থেকে ফুল ফোটা শুরু হয়ে শরৎকাল পর্যন্ত ফুল ফোটে এবং শীতকালেও গাছে ফুল দেখা যায়। ফুল শেষে গাছে ফল হয়। ফল পঞ্চকোণাকৃতির, প্রথমে সবুজ রং এবং পরে পরিপক্ব ফল কালো রং ধারণ করে। পরিপক্ব ফল ফেটে যায়। ফলের ভেতর কম্বলের মতো লোমশ অংশ থাকে। ফল পাঁচটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত এবং এর ভেতর কালিজিরার মতো ছোট ছোট বীজ থাকে।

সাধারণত সব ধরনের সুনিষ্কাশিত মাটিতে উলটকম্বল গাছ জন্মে। তবে দো-আঁশ মাটি হলে ভালো। এ গাছ ছায়া সহ্য করতে পারে। পাহাড়ি বনাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রাম, শহর, বিভিন্ন পারিবারিক বাগান, রাস্তার ধার, ভেষজ বাগানে উলটকম্বল গাছ রোপণ করতে দেখা যায়।

ulot-in-(1)

উলটকম্বল গাছের পাতা, ডাল, মূল, বাকল বিভিন্ন রোগের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গাছের বাকল ও ডাঁটা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে আঠালো পদার্থ বের হয় যা কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে। পাতার ডাঁটা প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া উপশম, আমাশয় রোগের জন্য উপকারী। পাতা ও কাণ্ডের রস গনোরিয়া, ফোঁড়া ও স্ত্রী রোগে উপকারী। গবাদিপশুর পাতলা পায়খানা, বিলম্ব প্রজনন এবং হাঁস-মুরগির বিভিন্ন চিকিৎসায় উলটকম্বলের ব্যবহার রয়েছে।

এসইউ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।