পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষক
লোকসানের ভয়ে দিন দিন পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন মেহেরপুরের কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে পাটের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নানা কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে সরকার।
গত কয়েক বছর ধরে পাট চাষে লোকসান গুনতে হয়েছে কৃষকদের। তাই অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পাট চাষ থেকে। বিঘাপ্রতি জমিতে পাট আবাদে ১০-১১ হাজার টাকা খরচ হলেও বিক্রি হয় ৮-৯ হাজার টাকা। ফলে জেলায় দিন দিন কমছে পাটের আবাদ।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ২৩ হাজার ৭৫৫ হেক্টর, ২০১৬ সালে ২৭ হাজার ২১০ হেক্টর, ২০১৭ সালে ২৫ হাজার ৮৪৫ হেক্টর, ২০১৮ সালে ২০ হাজার ৭৯০ হেক্টর, চলতি বছর ১৯ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়।
> আরও পড়ুন- ধানে পোকার আক্রমণে লোকসানে কৃষকরা
পাট চাষি আব্দুল হামিদ, মিলন রহমান ও আব্দুল জাব্বার বলেন, ‘দেশি জাতের বীজ না পাওয়ায় বেশি দামে বিদেশি বীজ কিনতে হয়। অনেক সময় নিম্নমানের বীজের কারণে ফলন ভালো হয় না। প্রতিবিঘা জমিতে উৎপাদন খরচের চেয়ে বিক্রি হয় কম। কৃষককে ৩-৪ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়। তাই দিন দিন পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে চাষিরা।’
কৃষকরা আরও বলছেন, ‘জেলার একমাত্র পাট ক্রয়কেন্দ্রে পাট বিক্রি করতে হয় বাকিতে। তাছাড়া সময়মতো কৃষকদের কাছ থেকে পাট কেনা হয় না। ফলে অন্য আবাদে যেতে পারেন না তারা। ফলে কম দামে পাট বিক্রি করে দিতে হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে।’
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘পাট ওঠার সময় মিলগুলোতে পাট কেনা বন্ধ থাকে। এর সুযোগ নেয় বড় বড় ব্যবসায়ীরা। তারা সিন্ডিকেট করে পাটের দাম কমিয়ে দেয়।’
> আরও পড়ুন- সোনাতলায় বোরো ধান নিয়ে হতাশ কৃষকরা
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান জানান, নিম্নমানের পচন পদ্ধতির কারণে পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আসিফ ইকবাল/এসইউ/পিআর